যে শর্তে মোদির সঙ্গে ঢাকা আসতে রাজি হলেন মমতা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনের মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্কের বিষয়টি খুবই খোলামেলা। একে অন্যকে সহ্য করতে পারেন না তারা। কিন্তু তারা একসঙ্গে বাংলাদেশ সফরে আসবেন- একটু অবাক করার মতো বিষয় বটে। কিন্তু এখানে নাকি অন্য রসায়ন ঘটেছে।

ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া মোদি-মমতার ঢাকা সফরের সেই রসায়নের জট খোলার চেষ্টা করেছে।

বিশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত ছিলেন, তিনি ঢাকা সফরে যাচ্ছেন না। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সেই দিনের একটি ফোন নাকি মমতার মন গলিয়ে দিয়েছে। আর ভারতের রাজনীতিতে মোদি-মমতার রাজনীতির নতুন মেরুকরণ হয়েছে।

সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতাকে ঢাকা নিয়ে আসার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হয়। মমতাকে রাজি করাতে তিনি কলকাতার প্রধান সচিবের কার্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। এ সময় মমতার পক্ষে কলকাতার প্রধান সচিবের কার্যালয় মোদি সঙ্গে মমতার ঢাকায় সফরের ব্যপারে দুইটি শর্ত দেয়।

প্রথমটি, ঢাকা সফরের সময় যেন তিস্তা পানিচুক্তি সমাধানের ওপর কোনো উপায় না খোঁজা হয় এবং সম্প্রতি পাস হওয়া স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী ছিটমহল বিনিময়ের পর পশ্চিমবঙ্গের নতুন নাগরিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

কলকাতার ওই শর্তের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই মমতাকে ফোন দেন সুষমা। তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা মোদির সঙ্গে ৬ ও ৭ জুন ঢাকা সফরে যেতে রাজি হন। মোদি ওই সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তিতে সই করার কথা রয়েছে।

এর আগে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় মমতাকে সঙ্গী করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তৎকালীন সরকার। কিন্তু মোদি এক্ষেত্রে সফল হয়েছেন।

এছাড়া ৯ মে কলকাতার রাজভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি মমতাকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। সে সময়ও তিনি মোদির সঙ্গে ঢাকা সফরের ব্যাপারে সম্মতি জানান।

তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিবাচক হলেও পশ্চিমবঙ্গের সরকার দৃশ্যত এর বিরোধিতায় রয়েছে। গত মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে এমনটাই ইঙ্গিত করলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

তিনি বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি শিগগিরই কার্যকর করা হবে। এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে সাহায্য করবে বলে আশা করেন তিনি। ঢাকায় তিস্তাচুক্তির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে মমতা তাগাদা দেবেন বলেও আশা করেন তিনি। যদিও ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরে এসে শেখ হাসিনাকে তিস্তা চুক্তির ব্যপারে আশ্বস্ত করেন। ওই সময় তিনি অভিযোগ করেন, তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থকে ‘অবজ্ঞা’ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার । তাই ওই চুক্তির খসড়া পরিবর্তন করলেই চুক্তিতে তার সরকার বিরোধিতা করবে না।



মন্তব্য চালু নেই