যে কারণে বৃদ্ধার পা ছুঁলেন মোদি

সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। কিন্তু তাতে কি, নিজের বাসায় শৌচাগার (টয়লেট) ছিল না, তাই পোষা ছাগল বিক্রি করে সেই রুপি দিয়ে শৌচাগার বানিয়েছিলেন ছত্রিশগড়ের ধামতাড়ি জেলার কোটাভারি গ্রামের বাসিন্দা কুনওয়ার বিবি। তার এ কাজে মুগ্ধ হয়ে ১০৪ বছরের এই বৃদ্ধার পা ছুঁড়ে প্রকাশ্যে নমস্কার করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

রবিবার ছত্রিশগড়ের নকশাল অধ্যুষিত রাজন্দগাঁও জেলার কুরুভাটে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে কুনওয়ার বিবিকে ডেকে নেন মোদি। এরপর তাঁর পা ছুঁয়ে আর্শীবাদ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি কাজের প্রশংসা করে মোদি জানান, এটাই ভারতের পরিবর্তনের বড় উদাহরণ।

ছত্রিশগড়ের রাজধানী রায়পুর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত গ্রাম হল কোটাভারি। গ্রামে সর্বসাকুল্যে ৪০০ মানুষের বসবাস। বর্ষাকালে এই গ্রাম অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবাক করার মতো ঘটনা হলেও এটাই সত্যি যে, পুরো গ্রামে একটিও শৌচাগার নেই। শত বছরের এই বৃদ্ধার বাসায় টিভি নেই, পত্রিকাও পড়েন না, শৌচাগারও ছিল না। কিন্তু ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের আওতায় শৌচাগার নির্মাণ-এর যে মিশন মোদি হাতে নিয়েছেন, যেভাবেই হোক না কেন, সেই খবর এসে পৌঁছেছিল এই বৃদ্ধার কাছে। এরপরই মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন বাসাতেই শৌচাগার তৈরি করবেন। এরপর ২২ হাজার রুপিতে নিজের পোষা আট-দশটি ছাগল বিক্রি করে তাই দিয়েই বাড়িতে দুইটি শৌচাগার তৈরি করেন। এখানেই শেষ হয়ে যায়নি তার কাজ, গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দাদেরকেও শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন। নিজের ছেলে ও বৌমার সাথে বাস করেন কুনওয়ার বিবি।

কুনওয়ার বিবির প্রশংসা করে মোদি বলেন, ”দেশ এখন বদলাচ্ছে। একটা প্রত্যন্ত গ্রামের নারী যেখানে স্বচ্ছ ভারত মিশনের স্বপ্নকে পূরণ করতে এগিয়ে এসেছেন, তিনি নিশ্চয়ই অন্যদের কাছে বিশেষ করে অল্পবয়সীদের কাছে একজন অনুপ্রেরণা।”

একসময় মিডিয়া’র কাছে আর্জি জানিয়ে মোদি বলেন, ”আমি গণমাধ্যমকে বলতে চাই যে, আমাকে কভার করার কোন দরকার নেই, বরং এই নারী যে কাজ করেছেন তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেই খবরটা সারা দেশে ছড়িয়ে দিন।”



মন্তব্য চালু নেই