যে কারণে পদত্যাগ করলেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান

দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে থেকে যেতে পারেন বলে যখন গুঞ্জন চলছিল তখনই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা জানালেন এ গোয়েন্দা প্রধান।

বৃহস্পতিবার হাউস ইনটেলিজেন্স কমিটির সামনে স্বয়ং ক্ল্যাপারই খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তবে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও এখনও অব্যাহতি নিচ্ছেন না ক্ল্যাপার। তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে ওই পদত্যাগপত্র।

বৃহস্পতিবার হাউস ইনটেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে উদ্বোধনী বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে তার থেকে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দেন ক্ল্যাপার। প্যানেলের র‍্যাংকিং ডেমোক্র্যাট অ্যাডাম শিফই এ প্রসঙ্গ তুলেছিলেন।

অ্যাডাম বলেছিলেন, ক্ল্যাপার ট্রাম্পের প্রশাসনে থেকে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন শুনছেন তিনি। আর সে সম্ভানা নাকচ করে দিয়ে ক্ল্যাপার বলেন, ‘এমনটা হচ্ছে না। গত রাতে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমার ভালো লাগছে তাতে। আমার হাতে আর ৬৪ দিন সময় আছে।’

পরে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের কার্যালয়ের মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত নিয়ম মেনে গোয়েন্দা প্রধান ক্ল্যাপার তার পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এটি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।’ অর্থাৎ, বারাক ওবামার প্রশাসন বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকছেন তিনি।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ, দ্য ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ) এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইসহ ১৭টি সংস্থার দেখভালের কাজ করে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা ন্যাশনাল এজেন্সি। গোয়েন্দা সংস্থাটির পরিচালক হিসেবে ক্ল্যাপারের ওপর এ দায়িত্ব বর্তেছিল। ১ লাখ ৭ হাজারেরও বেশি কর্মীকে তার কাছে রিপোর্ট করতে হয়।

এদিকে নতুন প্রশাসনে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হিসেবে একজন অভিজ্ঞকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য আনগুস কিং ও জেমস ল্যাংকফোর্ড। এ ব্যাপারে দ্রুত কাজ করার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের মতে ট্রাম্প যদি দ্রুত জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের নিয়োগ চূড়ান্ত করেন তবে তিনি অন্য গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের নিয়োগের ব্যাপারে ট্রাম্পকে পরামর্শ দিতে পারবেন।

ট্রাম্পের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনে অস্থিরতা চলার কারণে সরকার গঠন প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে আছে বলে যে গুঞ্জন চলছে তার মধ্যেই এ আহ্বান জানানো হলো। অবশ্য ট্রাম্প এ ধরনের সংকটের খবর নাকচ করে দিয়েছেন। ট্রাম্প আনুষ্ঠানিক শপথ নেবেন আসছে বছরের ২০ জানুয়ারি।

মার্কিন রীতি মেনে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের দিন থেকে শুরু করে ট্রাম্পের শপথের আগ পর্যন্ত কাজ করছে ক্ষমতা হস্তান্তরে গঠিত এক অন্তবর্তী দল। প্রেসিডেন্সিয়াল ট্রানজিশন অ্যাক্ট নামের আইনের অধীনে এই দল অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সরকার গঠন ও অন্যান্য পদে নিয়োগ দেওয়াসহ পরামর্শ দিয়ে থাকে। সূত্র: বিবিসি, পলিটিকো, বাংরা ট্রিবিউন।



মন্তব্য চালু নেই