মোদির ধমকে কেঁদেই ফেললেন মন্ত্রী !

সম্প্রতি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেন গিরিরাজ। যার জেরে সোমবার তাঁকে সংসদে ক্ষমাও চাইতে হয়। কিন্তু তাতেই ঘটনার শেষ হয়নি। দলীয় মন্ত্রীর এহেন ব্যবহারে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গিরিরাজকে ডেকে রীতিমত ধমক দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে মোদীর সঙ্গে দেখা করেন গিরিরাজ। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা দেখেন, কিছুক্ষণ পরে কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসছেন। যদিও মন্ত্রী নিজে এই খবরকে পুরোটাই জল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। গিরিরাজ পরে জানান, এদিন তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নাকি দেখাই হয়নি! অস্বীকার করা হয়েছে পিএমও-র তরফেও।

বিতর্কের সূত্রপাত গতমাসে সোনিয়া গান্ধীকে নিয়ে গিরিরাজের একটি বর্ণবাদী মন্তব্যকে ঘিরে। গায়ের রং সাদা বলেই সোনিয়া কংগ্রেসের সভানেত্রী হয়েছেন, চলতি মাসের গোড়ায় সোনিয়াকে এভাবে কটাক্ষ করেন গিরিরাজ। তিনি বলেছিলেন, রাজীব গান্ধী যদি সাদা চামড়ার নারীকে বিয়ে না করে, কোনও নাইজেরীয়কে বিয়ে করতেন, কংগ্রেস কি সেই মহিলাকে নেতা বলে মানত? গিরিরাজের এমন বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে নানা মহল। এমনকী ভারতে নাইজেরিয়া দূতাবাসের তরফে প্রতিবাদ জানানো হয় গিরিরাজের মন্তব্যের।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে বেশ বিড়ম্বনায় পড়ে মোদী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। গিরিরাজের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোমবার সোচ্চার হয় কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তাঁর পদত্যাগের দাবি তোলাও হয়। কংগ্রেস সদস্যরা ওয়েলে নেমে স্লোগান দেন, বিক্ষোভ দেখান। বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, বিজেপি এমপি, মন্ত্রীরা লাগাতার নানা অবাঞ্ছিত, দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলছেন, ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে সম্প্রীতি। বাধ্য হয়ে প্রায় ২০ মিনিট সভা মুলতুবি করে দেন স্পিকার।

সভার কাজ পুনরায় চালু হলে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু সাফাই দিয়ে বলেন, সরকার ও বিজেপি এমন মন্তব্য অনুমোদন করে না। কিন্তু এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় গিরিরাজকে কক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁর অনভিপ্রেত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হয়। গিরিরাজ বলেন, কাউকে আঘাত করা উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর। তবে কারও এতে খারাপ লাগলে তিনি সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন। তবে, মোদী যে গিরিরাজের আলটপকা মন্তব্য ভাল চোখে নেননি, তা স্পষ্ট হয়ে যায় মঙ্গলবার। এদিন সকালেই বিজেপি সংসদীয় কমিটির বৈঠক বসে। এরপরই গিরিরাজকে সমন পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়। অতীতেও বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন এই নেতা। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচার চলাকালীন গিরিরাজ মন্তব্য করেছিলেন, যাঁরা নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা পাকিস্তানে চিরতরে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকুন। আবার কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর ‘বিশ্রাম’ প্রসঙ্গে মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে মাঝ-সমুদ্রে নিখোঁজ মালয়েশিয় বিমানের তুলনা করেছিলেন ‘মোদী-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত গিরিরাজ।



মন্তব্য চালু নেই