মিয়ানমারে উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে

মিয়ানমারের নৌবাহিনী বৃহস্পতিবার যে দুই শতাধিক অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে তার মধ্যে দেশটির রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যও রয়েছে। যদিও উদ্ধারের পর থেকে নেইপিদো সরকার দাবি করে আসছে যে তারা সবাই ‘বাংলাদেশী’।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স উদ্ধার হওয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে তাদের মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে। রবিবার রয়টার্স বলেছে, মিয়ানমার বৃহস্পতিবার যাদের উদ্ধার করেছে তাদের মধ্যে আটজন রোহিঙ্গা রয়েছে। এর ফলে মিয়ানমার সরকারের ওই দাবি যে সত্য নয় তাই প্রমাণিত হলো।

খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের ওই উদ্ধার অভিযানের মাধ্যমে মিয়ানমার প্রমাণ করার চেষ্টা করছে সম্প্রতি বঙ্গোপসাগর, আরবসাগর ও আন্দামানে যেসব অভিবাসীর সন্ধান পাওয়া গেছে তা রোহিঙ্গা মুসলিম নয়। সাম্প্রতিক অভিবাসী সংকট নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পক্ষ থেকে যখন মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ছে তখন উদ্ধার অভিযান শুরু করে দেশটি।

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা জো হতেই শুক্রবার দাবি করেন, নৌকায় উদ্ধার হওয়ারা কেউ মিয়ানমারের নয়। এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কিন্তু উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিউকতো গ্রামে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাক্ষাতকার নিয়ে রয়টার্স বলেছে, উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে।

প্রসঙ্গত, উদ্ধার হওয়া দুই শতাধিক অভিবাসীকে কিউকতো গ্রামের একটি ইসলামিক স্কুলে রেখে খাবার ও অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

মার্মত রারবি নামের ২৩ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘পাচারকারীরা আট রোহিঙ্গাকে কোনো অর্থ ছাড়াই তুলে নেয়। আমাদের যেহেতু কোনো কাজ নেই এবং হারাবার কিছু নেই। তাই নৌকায় উঠে পড়ি। কিন্তু পাচারকারীরা পরে আমাদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সাড়ে ছয় হাজার রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ান) দাবি করে।’ তিন মাসের বেশি ওই নৌকাতে ছিলেন বলে দাবি করেন রারবি।

হাজার হাজার রোহিঙ্গা মানবপাচারকারীদের নৌকায় উঠেছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। মিয়ানমারের অন্তত ১১ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের বেশির ভাগই দেশটিতে রাষ্ট্রহীন ও অধিকার বঞ্চিত অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া ২০১২ সালে সংখ্যাগরিষ্ট বৌদ্ধদের সহিংসতায় ১ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়।



মন্তব্য চালু নেই