সিটি নির্বাচন : মাঠে থাকছে না সেনাবাহিনী !

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে সেনা মোতায়েন নিয়ে আগের দিনের চিঠি পাল্টে নতুন একটি চিঠি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নতুন চিঠিতে বলা হয়েছে, সেনা সদস্যরা সেনানিবাসের ভেতরেই থাকবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুরোধ করলে তারা বাইরে আসবেন।

বিএনপির ক্রমাগত দাবির মুখে অনিচ্ছা নিয়েই মঙ্গলবার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ২৮ এপ্রিলের ভোটের জন্য তিন ব্যাটালিয়ন সৈন্য চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দিয়েছিল ইসি।

সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে থাকবে বলে মঙ্গলবার সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মাঠে রাখার দাবি জানায় বিএনপি।

এর মধ্যেই বুধবার ইসি থেকে আরেকটি চিঠি যায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে। চিঠিতে দেখা যায়, মঙ্গলবারের তারিখেই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব সামসুল আলম বলেন, “দ্বিতীয় চিঠিটি আগের চিঠির স্থলাভিষিক্ত হবে।”

বুধবার সন্ধ্যার পর পাঠানো চিঠিটি নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

দুটি চিঠি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুটির ভাষা প্রায় একই রকম। শুধু একটি স্থানে পরিবর্তন এসেছে।

মঙ্গলবার পাঠানো চিঠিতে বক্তব্য ছিল- “…তারা মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকলেই তারা পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন।”

নতুন চিঠিতে এই বাক্যটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে এভাবে- “তারা (সেনাবাহিনী) মূলত সেনানিবাসের অভ্যন্তরে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অবস্থান করবেন এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুরোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।”

চিঠির ভাষা পরিবর্তনের বিষয়ে সিইসিসহ কোনো কমিশনারই সাংবাদিকদের কাছে কিছু বলতে চাননি। তাদের অধিকাংশের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলীকে কল করলেও তারা তা ধরেননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তা বলেছেন, “সেনাবাহিনী নামলে তাদের ক্যাম্প করাসহ আনুষঙ্গিক কাজ সারার যথেষ্ট সময় নেই। তাই সেনাবাহিনী সেনানিবাসেই থাকবেন। আর প্রয়োজন পড়লে তো বের হতে পারছেনই।”

বিএনপির দাবির মধ্যে ইসি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলেও দলটি সমর্থিত প্রার্থীরা একে ‘আইওয়াশ’ বলছেন। তারা মনে করেন, বিচারিক ক্ষমতা না দিলে সেনা মোতায়েনে ফল আসবে না।

তবে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবটি মঙ্গলবারই নাকচ করে দেন সিইসি।

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনাবাহিনীকে নিচ্ছে পুলিশ।

এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

EC-Letter-2

ইসি কর্মকর্তারা জানান, কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা মোতায়েন পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক হবে।



মন্তব্য চালু নেই