মাকে দেখেই কেঁদে ফেলল ছোট্ট ওমরান

মাথায় রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। ব্যান্ডেজে ঢাকা মাথা। বুজে গিয়েছে বাঁ চোখ। তবু চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি পড়েনি। তাকে ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে উদ্ধারের সময়ও সে ছিল একেবারেই ভাবলেশহীন। কিন্তু যখনই সে তার আহত বাবা-মাকে দেখল তখনই কাঁদতে শুরু করল। এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম সে হলো পাঁচ বছরের ওমরান দাকনিশ। গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার আহত এক শিশু। যাকে দেখে আমরা আবারো আয়লান কুর্দিকে মনে করলাম। এই শিশু এখন সিরিয়া যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত শিশুদের প্রতীক।

দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়। গত পরশু রাতে রুশ বিমান হামলায় ভেঙে পড়ে ওমরানদের বাড়ি। ধ্বসংস্তুপের নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তারপর অ্যাম্বুল্যান্সে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। প্রথমদিকে ওমরানের মা-বাবার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে, গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরও উদ্ধার করা হয়েছে।

হাসপাতালের এক নার্স জানিয়েছেন, ওমরানের মাথায় চোট লেগেছিল। চিকিৎসার সময় সে এক ফোটাও কাঁদেনি। তবে সে বার বার তার বাবা-মায়ের কথা জানতে চেয়েছিল। পরে আহত বাবা-মাকে তার কাছে আনা হলে কাঁদতে শুরু করে সে। এখন সে কিছুটা সুস্থ আছে।

বাবা-মা এবং তিন ভাইবোনের সঙ্গে আলেপ্পোর কাতেরজি জেলায় থাকে ওমরান। গত পরশুর ওই বিমান হামলায় আহত হয় আরো ১২ শিশু। তাদের সকলের বয়সই পনেরোর নীচে। সিরিয়ায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা ওমরানের ভিডিও ইন্টারনেটে পোস্ট করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সেটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচেও ওমরান কাঁদেনি। কোলের উপরে হাত দু’টি রেখে চুপ করে বসেছিল। তবে তা যন্ত্রণায় না ঘটনার ভয়াবহতায় বিহ্বল হয়ে সেটা বোঝা যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই