ভারতে প্রথম লিঙ্গ বৈষম্যহীন প্রশংসাপত্র পেলেন অনিন্দিতা

ভারতে এই প্রথম কোনো ভারতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট পেয়ে নজর কাড়লেন হায়দরাবাদের নালসার আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর অনুরোধকে সম্মান জানিয়েই এই শংসাপত্র দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে স্নাতকের নামের আগে মিস্টার বা মিস নয়, বরং লেখা থাকছে এমএক্স (মিক্স )। আর এই শংসাপত্রে সর্বনামেও হি বা শি-র পরিবর্তে লেখা আছে দে। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট রূপান্তরকামীদের তৃতীয় লিঙ্গ-এর স্বীকৃতি দেওয়ার পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তির আবেদনপত্রে তৃতীয় লিঙ্গ বিকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু তৃতীয় লিঙ্গের যে পড়ুয়ারা ভর্তি হবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কী নীতি নেওয়া হবে, তা এখনও স্পষ্ট করেনি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই।

এমএক্স উপাধিটি সাধারণত স্ত্রী-পুরুষ বাদে অন্যকোনো লিঙ্গের ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে এই উপাধি ব্যবহার করা যায়। তা ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি নিজের লিঙ্গভিত্তিক পরিচয় প্রকাশ করতে না চান, তাঁর ক্ষেত্রেও এমএক্স লেখা হয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ এই অভিনব অনুরোধ কেন? অনিন্দিতার নিজে বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শংসাপত্র দেওয়ার আগে তার একটা খসড়া পাঠিয়েছিলেন। তাতে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি না, তা জানাতে ই-মেইল করতে বলা হয়েছিল। আর সেখানেই আমি এই অনুরোধ জানিয়ে পাঠিয়েছিলাম। শংসাপত্রে আমার লিঙ্গের উল্লেখ থাকতে হবে কেন?

নালসার কনভেনার অব দ্য একাডেমিক্স অ্যান্ড এগজামিনেশন্স কমিটির অমিতা ধন্দার কথায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরাও লিঙ্গ সাম্যের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো নীতি স্থির করিনি। কিন্তু এই পড়ুয়া যে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে আমরা আপত্তিজনক কিছু খুঁজে পাইনি। সম্প্রতি এমএক্স-এর ব্যবহার ইউরোপে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেখানে রূপান্তরকামী ছাড়া আরও অনেকেই নিজেদের লিঙ্গগত পরিচয় প্রকাশ না করার জন্য এমএক্স ব্যবহার করা পছন্দ করেন। অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি লিঙ্গনিরপেক্ষ উপাধি চান, তবে তার জন্য আবেদন জানানোর বিশেষ ব্যবস্থা আছে। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশেনারিতেও মি., মিসেস বা মিস-এর সঙ্গে স্থান করে নিয়েছে লিঙ্গনিরপেক্ষ এমএক্স।



মন্তব্য চালু নেই