ভারতীয় সেনা প্রধানের হুমকিতে উত্তাল কাশ্মীর

বিক্ষুব্ধ তরুণদের হুমকি দিয়ে আগুনে ঘি ঢেলেছেন ভারতের সেনাপ্রধান। এতে উপত্যকার পরিস্থিতি জটিলতর হবে। সেনাধ্যক্ষ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের বক্তব্যের নিন্দায় সরব হলেন কাশ্মীরের রাজনীতিক দলে থেকে শুরু করে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। খবর ইন্ডিয়া টাইমসের।

জঙ্গি দমন অভিযানে বাধা দিলে, সন্ত্রাসবাদীদের পালাতে সাহায্য করলে এবং পাকিস্তান ও আইসিসের পতাকা দেখালে দেশদ্রোহী হিসেবে গণ্য করা হবে। অশান্ত কাশ্মীরের নবীন প্রজন্মকে সতর্ক করে বুধবার ঘোষণা করেছেন ভারতীয় সেনার সেনাধ্যক্ষ। তার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন কাশ্মীরের রাজনীতিক মহল ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শিবির।

এ ব্যাপারে জম্মু ও কাশ্মীরের বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের তরফে দুঃখ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ‘সংঘর্ষ স্থানে তরুণদের ছুটে যাওয়া এবং জঙ্গি দমন অভিযানে সামিল নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা করে ঢিল ছোড়ার মতো ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এর মাধ্যমে কাশ্মীরের সামগ্রিক স্বপ্নভঙ্গ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ স্পষ্ট হয়েছে। বিষয়টি বুঝে উদারতা ও দক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা প্রয়োজন। প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়া উপত্যকার বিক্ষুব্ধ তরুণদের হুমকি দিয়ে বিশেষ লাভ হবে না।’

শাসক দল পিডিপি-র সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন ভাট সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘এমন ঘটনা আজ নতুন নয়, অতীতেও ঘটেছে। এই কারণেই এমন পরিস্থিতিতে আমরা বলি, শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীর সংযম প্রদর্শন করা জরুরী। এটি একটি জনকল্যাণমূলক রাজ্য এবং আমাদের কিছু আদর্শ মেনে চলতে হয়।’

অন্য দিকে হুরিয়ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি গিলানি বলেন, ‘রাজ্যে নিরন্তর রক্তপাত ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পিছনে ভারতের ঔদ্ধত্য ও বস্তাপচা ভাবনা কাজ করে। রাজ্যের মানুষ, বিশেষ করে নবীন প্রজন্ম এই অন্যায় কর্তৃত্ব ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।’

মধ্যপন্থী বিচ্ছিনবাদী নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক জানিয়েছেন, হুমকির বদলে ভারতীয় সেনাধ্যক্ষের উচিত ছিল কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়ে সমাধানসূত্র অনুসন্ধান করা। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মন্তব্য ‘অপরিণত রাজনৈতিক ভাবনা’ বলে মনে করছেন কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ইয়াসিন মালিক।

প্রত্যাশা মতোই সেনাধ্যক্ষের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রে আসীন বিজেপি। এদিন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘যারা পাথর ছুড়ছে এবং রাষ্ট্রের কল্যাণের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সেনাধ্যক্ষ যা বলেছেন, তা রাষ্ট্রের স্বার্থে। রাষ্ট্রের স্বার্থের উপরে কিছু হয় না।’



মন্তব্য চালু নেই