বুশের ‘মুসলিম নিবন্ধন’ ফিরিয়ে আনছেন ট্রাম্প

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আমলের বিতর্কিত মুসলিম নিবন্ধন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিমদের পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি ও দেশটিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্য মুসলিমদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।

নির্বাচনের আগে ট্রাম্প মুসলিম ডাটাবেজ তৈরির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সমালোচনার মুখে সেই প্রচারণা থেকে পিছু হটেছিলেন তিনি।

তার মুখপাত্র জানিয়েছিলেন- ট্রাম্প কখনই এমন ব্যবস্থার প্রস্তাব করেননি।

তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সিএনএনকে জানিয়েছেন, মুসলিম ডাটাবেজ হবে। আর এটি জর্জ ডব্লিউ বুশের জাতীয় নিরাপত্তা প্রবেশ-প্রস্থান নিবন্ধন ব্যবস্থার (এনএসইইআরএস) সঙ্গে সাদৃশপূর্ণ হবে।

সিএনএন জানায়, ৯/১১ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ট্রি-এক্সিট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’ (এনএসইইআরএস) অনুযায়ী জঙ্গিবাদ কবলিত দেশগুলো থেকে আসা মুসলমানদের বিশেষভাবে নাম-নিবন্ধন করতে হতো। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে সাক্ষাৎকার এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর অবস্থান সম্পর্কেও জানাতে হতো।

২০০২ সালে কার্যকর হওয়া এ আইনে ২৫টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল, এর মধ্যে ২৪টিই মুসলিম রাষ্ট্র। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত, ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, তিউনিসিয়া, বাহরাইন, আলজেরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, মিসর, ইরিত্রিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লিবিয়া ও মরক্কো।

একমাত্র মুসলিম রাষ্ট্র ছিল উত্তর কোরিয়া। এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে তা বাতিল করা হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী মুসলমানদের নাম-ঠিকানা নিবন্ধনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করছেন তার উপদেষ্টারা। ট্রাম্প-মিশনের একজন প্রভাবশালী সদস্য ও কানসাসের স্টেট সেক্রেটারি ক্রিস কোবাশ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পরামর্শকরা মুসলমান প্রধান দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের যাবতীয় তথ্য নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য আলোচনা করছেন।

কোবাশের মতে, এ উপদেষ্টারা আসলে অভিবাসীদের বিষয়ে ট্রাম্পের পূর্ব-ঘোষিত ভাবনার একটা বাস্তব রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, আমেরিকার সঙ্গে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে ঘোষণা ট্রাম্প দিয়েছিলেন সেটাও দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে তার প্রশাসন কংগ্রেসের তাৎক্ষণিক অনুমতির জন্য অপেক্ষা করবে না। কোবাশ নিজেও কট্টর অভিবাসনবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত।

ট্রাম্পের অভিবাসন বিষয়ক উপদেষ্টাদের সঙ্গে সবসময় ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন তিনি। এ কারণেই কোবাশের দেয়া তথ্য গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে বিশ্ব মিডিয়া। অভিবাসী মুসলমানদের নাম-নিবন্ধনের বিষয়ে যতটুকু জানা গেছে, তা হল সবাইকে একটি করে ফর্ম দেয়া হবে, যেখানে তাদের ধর্ম পরিচয় উল্লেখ করতে হবে। সন্দেহজনক মনে হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেয়া হবে, আটক করা হবে অথবা ফেরত পাঠানো হবে।



মন্তব্য চালু নেই