বিশ্ব পরিস্থিতির ১৪ চিত্র মানবতার ওপর আপনার আস্থা ফেরাবে

আপনি যদি ২০১৬ সালের নেতিবাচক সব ঘটনাপ্রবাহ দেখে বিশ্ব মানবতার ওপর আস্থা হারিয়ে থাকেন তাহলে কিছু বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত দেখে তা হয়তো ফিরেও আসতে পারে।
আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটা ওয়েবসাইটে অর্থীতিবিদ ম্যাক্স রোজার বিশ্বপরিস্থিতির চিত্র হাজির করেছেন বেশ কিছু সংখ্যক চার্টের মাধ্যমে।

এতে বিশ্বের নানা খাতের পরিস্থিতি সংক্ষেপে তুলে ধরেন তিনি।
রোজার এর তথ্য-উপাত্তে বিশ্বের উন্নয়নের গল্পই বলা হয়েছে। তার উপস্থাপিত চার্টগুলোতে বিশ্বকে আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ, ধনী, সংযুক্ত এবং সবচেয়ে বেশি উচ্চ শিক্ষিত মনে হয়েছে।
এখানে এমন ১৪টি উৎসাহব্যঞ্জক চার্ট উপস্থাপন করা হলো যেগুলো আপনার উদ্দীপনা বাড়াতে ভুমিকা রাখবে:
১. মানবজাতির সবচেয়ে বড় অগ্রগতিটি সাধিত হয়েছে দীর্ঘায়ু অর্জনের মাধ্যমে। ১৮৩৮ সালে অনেক দেশেরই গড় বয়স ছিল ৪০ বছর। কিন্তু সন্তান জন্মদানের নিরাপদ প্রক্রিয়ার বিস্তারের ফলে তা এখনি দ্বিগুন বেড়ে ৮০ হয়েছে।
২. গত ১৫০ বছরে শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে লক্ষণীয়ভাবে। ডাক্তাররা সন্তান প্রসব প্রক্রিয়া ও টিকার উন্নয়ন ঘটানোয় এখন মরণঘাতি রোগের ঝুঁকি অনেকে সীমিত হয়ে এসেছে।
৩. বিশ্ব সামষ্টিকভাবে আগের চেয়ে ধনী হয়ে উঠছে। এখনো বিশ্বের ১৩০ কোটি মানুষ চরম দরিদ্র। তবে বাকীদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটে চলেছে।
৪. গত দুই শতকজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে আরো ব্যাপকভাবে উন্নয়ন পরিত্রাণ লাভ করা গেছে। দশকের পর দশক ধরে লোকে দারিদ্র থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
৫. সৌভাগ্যক্রমে জীবনমানের উন্নতির পাশাপাশি কর্মঘন্টার দৈর্ঘ্যও কমে এসেছে। ১৯ শতকের শেষদিকে ইউরোপীয়রা বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুন সময় ধরে কাজ করতেন।
৬. বিশ্বব্যাপী সমাজগুলো আগের চেয়ে আরো বেশি গণতান্ত্রিক এবং কম স্বৈরাচারি হয়ে উঠছে। ১৯৯০-র দশকের শুরুতেই উপনিবেশবাদের মৃত্যু ঘটে।
৭. বিশ্বের অনেক দেশে এখনো স্বৈরতন্ত্র বহাল আছে। তথাপি গণতন্ত্রেরও প্রসার ঘটছে। বর্তমানে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ গণতন্ত্রের অধীনে বাস করছেন।
৮. গণতন্ত্র বিস্তারের বিষয়টি প্রতিফলিত হচ্ছে যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট মৃত্যু কমে আসার মধ্যে দিয়ে। জ্ঞানীয় বিজ্ঞানী (cognitive scientist) স্টিভেন পিঙ্কার উল্লেখ করেছেন, গত কয়েক শতক ধরেই বিশ্বব্যাপী সহিংসতার হার কমে আসছে।
৯. আর ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ যেন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে পারে সে উদ্দেশ্যে বিশ্ব অনেক বড় বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যমের সংবাদ ও সামাজিক গণমাধ্যমের নিউজফিডে সহিংসতার খবরের ছড়াছড়ি সত্ত্বেও বাস্তবে বিশ্ব এখন ইতিহাসের সবচেয়ে নিরাপদ অবস্থানে আছে।
১০. গত কয়েকদশকে গণহত্যার ঘটনাও প্রায় শুণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এ থেকেও প্রমাণিত হয় মানবজাতির সদস্যরা পরস্পরের প্রতি আগের চেয়ে অনেক বেশি সহনশীল হয়ে উঠছেন।
১১. ১৯৫০ সালের তুলনায় বৈশ্বিক স্বাক্ষরতার হারও ব্যাপকহারে বেড়েছে। আর এর ফলেই সম্ভবত মানুষেরা নতুন নতুন ধারণা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। যার ফলে সজীব দৃষ্টিকোণ লাভের মাধ্যমে লোকে এখন দুনিয়া সম্পর্কে আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য-উপাত্ত আত্মস্থ করতে সক্ষম হচ্ছে।
১২. সাধারণভাবে শিক্ষারও বিস্তার ঘটছে। আর ১৯৭০ সাল থেকেই একেবারে নিরক্ষর লোকের সংখ্যা কমে আসছে। আর সে বছরই প্রথম বিশ্ব স্বাক্ষরতার হার সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত প্রথম সংগ্রহ করা হয়।
১৩. বিশ্ব যত বেশি আন্ত-সংযুক্ত হচ্ছে ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি ততই বিলাসের চেয়ে বরং নিত্য প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হচ্ছে। গত ২০ বছরে বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলেই ইন্টারনেট সেবার বিস্তার ঘটেছে। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বেশি বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
১৪. সবশেষে, গণ যোগাযোগ ইতিহাসের সবেচেয়ে বলিষ্ঠ অবস্থানে আছে। ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে সেলফোন ব্যবহার বিশ্বের সর্বত্র লাফিয়ে বেড়েছে। আর অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সেলফোন ব্যবহারের হারও শুধু আরো দ্রুত গতিতে বেড়ে চলবে।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার



মন্তব্য চালু নেই