বিশ্বে সামরিক খাতে বরাদ্দ লাফিয়ে বাড়ছে

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক খাতে লাফিয়ে বাড়ছে বরাদ্দ। যুদ্ধ প্রস্তুতি,অস্ত্রাগার সমৃদ্ধ করা আর বিধ্বংসী প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিপুল উৎসাহ দেখে উদ্বেগ বাড়ছে বিশেষজ্ঞদের।

আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা আইএইচএস জেন’স বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা খাতের বরাদ্দ নিয়ে ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে । সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, গত দু’এক বছরে গোটা বিশ্বে সামরিক ব্যয় লাফিয়ে বেড়েছে।

প্রতিরক্ষা খাতে খরচ প্রশ্নে আমেরিকা সবচেয়ে এগিয়ে এখনও। ২০১৬ সালে ৬২ হাজার ২০০ কোটি ডলারের কিছু বেশি অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে খরচ করেছে আমেরিকা।

১৯ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার সামরিক খাতে বরাদ্দ করে দ্বিতীয় স্থানে চীন। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রিটেনের প্রতিরক্ষার জন্য গত এক বছরে বরাদ্দ ছিল ৫৩৮০ কোটি ডলারের বেশি।

প্রায় ৫০৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ করে চতুর্থ স্থানে ভারত। সমীক্ষকরা বলছেন, সামরিক খাতে বিভিন্ন দেশ যেভাবে খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে,তা থেকেই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমীকরণ এবং আঞ্চলিক বিবাদকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি এশিয়ায়। তাই এই মহাদেশেই গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে প্রতিরক্ষা বরাদ্দ। তবে অন্যান্য অঞ্চলও খুব পিছিয়ে নেই।

এশিয়া
২০১৬ সালে সামরিক খাতে খরচ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এশিয়ায়। চীন এবং ভারত অবশ্যই তালিকায় অগ্রগণ্য।

২০১০ সাল নাগাদ চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। গত ছয় বছরে তা বাড়তে বাড়তে ইতিমধ্যেই ২০ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।

সমীক্ষকরা বলছেন, ২০২০ সাল নাগাদ ২৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে চীনের সামরিক ব্যয়। ভারতের সামরিক ব্যয় ২০১০ সাল নাগাদ ছিল ২২০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।গত ছয় বছরে তা বাড়তে বাড়তে ৫১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।

আইএইচএস জেন’স বলছে, পাউন্ডের দাম যেভাবে কমছে, তাতে ২০১৮ সালের মধ্যে ভারতের সামরিক ব্যয় ব্রিটেনের চেয়েও বেশি হয়ে যাবে। সামরিক খাতে ব্যয়ের হিসাবে ভারত তখন তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে।

প্রতিরক্ষা খাতে ৪৯০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি বরাদ্দের হিসাবে ভারতের ঠিক পিছনেই আরেক এশীয় দেশ সৌদি আরব। আন্তর্জাতিক তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে জাপান।প্রতিরক্ষা খাতে জাপান ২০১৬ সালে খরচ করেছে প্রায় ৪২০০ কোটি ডলার।

চলতি বছরে ৩৩০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি ব্যয় করে আরেক এশীয় দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান দশম স্থানে।

ইউরোপ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ প্রতিরক্ষা বরাদ্দ প্রায় ২২ হাজার কোটি ডলারের মতো। যদিও ইউরোপের সবক’টি দেশ এই হিসেবের অন্তর্ভুক্ত।

ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং জার্মানির প্রতিরক্ষা বরাদ্দ যোগ করলেই ১৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি হয়। অর্থাৎ অন্য ইউরোপীয় দেশগুলির বরাদ্দ নগণ্যই। সবচেয়ে পিছিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলি।

আমেরিকা
৬২ হাজার ২০০ কোটি ডলারের বিরাট সামরিক বরাদ্দ নিয়ে আমেরিকা স্বাভাবিকভাবেই সবার চেয়ে এগিয়ে। গোটা বিশ্বে প্রতিরক্ষা খাতে যা ব্যয় হয় তার ৪০ শতাংশই আমেরিকার।

পেন্টাগন বলছে, প্রতিরক্ষা বরাদ্দ ১ দশমিক ১ শতাংশ কমাতে পারে আমেরিকা। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করার পর আমেরিকা আদৌ প্রতিরক্ষা ব্যয় কমাবে কি না, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের সংশয় রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই