বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২২ বছর, ভারতজুড়ে উত্তেজনা

৬ ডিসেম্বর। ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২২ বছরপূর্তি আজ। হিন্দু মৌলবাদীদের উন্মাদনার শিকার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মুঘল স্থাপত্যটি। সেই কালো দিবসের র্বষপূর্তিতে শনিবার উত্তর প্রদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংস দিবসটিকে দেশটির মুসলিম সংগঠনগুলো ‘কালো দিবস’ বলে ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদসহ বেশ কয়েকটি হিন্দু কট্টরপন্থি সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে ‘সাহসী বিজয়ের দিন’ বলে। সংঘর্ষের আশঙ্কায় অযোধ্যা ও ফয়েজাবাদে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া পুরো অযোধ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে ১০ হাজার পুলিশ, সংযোগ করা হয়েছে দুই ডজনের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা।

অপরদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে ১৮ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চেন্নাইয়ের বিভিন্ন উপাসনালয়, আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, হোটেল, মার্কেট ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে ১৮ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত ৪ কমিশনার, ৪ জয়েন্ট কমিশনার ও ১৯ ডেপুটি কমিশনার এই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের তত্ত্বাবধানে থাকবেন। একই সঙ্গে থাকবে বোমা শনাক্তকারী ডগ স্কোয়াড।

দিবসটি উপলক্ষে অল ইন্ডিয়া বাবরি মস্ক রিবিল্ডিং কমিটি (এআইবিএমআরসি) ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম ইউনিটি ফ্রন্টের (এআইএমইউএফ) সদস্যরা শনিবার নয়াদিল্লির জন্তর মন্তরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। বিতর্কিত ওই স্থানেই বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের দাবি সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাদের কার্যালয়ে হস্তান্তর করেন।

১৫২৭ সালের ভারতের প্রথম মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে ভারতের উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট হিলের উপর একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। পরে তার নামানুসারে এর নাম রাখা হয় বাবরি মসজিদ।

বাবরি মসজিদমসজিদটি রাম মন্দিরের উপর নির্মিত বলে উনিশ শতকের শুরুতে হিন্দুদের কয়েকটি সংগঠন দাবি করে আসছিল। ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজেপির পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সমর্থকরা মসজিদটি সম্পূর্ণ ভূমিস্যাৎ করে দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রধান শহরগুলোতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এতে কেবল মুম্বাই ও দিল্লিতে নিহত হয় দুই হাজার মানুষ।

বাবরি মসজিদের ভূমি নিয়ে দায়ের করা মামলার রায় হয় ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর।এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন জন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ১.১২ হেক্টর জমি সমান তিনভাগে ভাগ করার রায় দেন। এর এক অংশ হিন্দু মহাসভা রাম জন্মভূমিতে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য, দ্বিতীয় অংশ ইসলামিক সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং বাকি তৃতীয় অংশ নির্মোহী আখরা নামে একটি হিন্দু সংগঠনকে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই