বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়, সময় বাড়ানোর দাবি
মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শেষ ছুটির দিনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতারা নিজেদের পছন্দের পণ্য কিনছেন। শেষ দিকে এসে কেনাকাটা জমে ওঠায় ব্যবসায়ীরা সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছরই শেষ দিকে মেলা জমজমাট হয়ে ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আগামী শুক্র ও শনিবার পর্যন্ত সময় বাড়ালে তাঁদের ভালো হয়।
গত শুক্রবার মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, বৈঠকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উপসচিব মোহাম্মদ রেজাউল করীম জানান, এবার মেলার সময় বাড়ানো হবে কি না, তা আগামীকাল রোববার জানা যাবে।
ফলে এবার বাণিজ্য মেলার পর্দা ৩১ জানুয়ারি নাকি ৪ ফেব্রুয়ারি নামবে তা আগামীকাল জানা যাবে।
আজ শনিবার মেলার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মেলা প্রাঙ্গণে। বাহারি অফারের ভিড়ে পছন্দের পণ্য কিনছেন ক্রেতারা।
গয়নার স্টলগুলোতে নারীদের ভিড় লেগেই ছিল। নতুন ডিজাইনের ইমিটেশনের গয়নার প্রতি নারীদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। স্টলগুলোতে বাহারি ডিজাইনের গয়না কিনতে ভিড় করছেন তরুণীরাও। আর ক্রেতা আকর্ষণে মেলায় ছাড়ের সঙ্গে আউটলেটগুলোতে ডিসকাউন্টে গয়না কেনার সদস্য কার্ড দিচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুয়েলারি।
ঝুমকা-কানের দুল, ডায়মন্ড কাট লকেট-চেইন, চুড়ি-ব্রেসলেট ও দৃষ্টিনন্দন আংটি আগত সব বয়সী নারীদের আকৃষ্ট করছে। দেড়শ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে গয়নার পসরা সাজিয়েছেন ক্রেতারা। অনেক অলংকারের স্টলেই রাখা হয়েছে হাতঘড়ির কালেকশন।
কে জেড স্টলের বিক্রেতারা জানান, এখানে ৩০০ টাকার পণ্য কিনলেই ক্রেতারা র্যাফল ড্রতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ইমিটেশনের গয়নার মধ্যে গলার চেইন, কানের দুল, চুড়ি ও ব্রেসলেট বেশি বিক্রি হচ্ছে।
অ্যালুমিনিয়ামের নানা গৃহস্থালি পণ্যের স্টল-প্যাভিলিয়নেও দেখা গেছে ভিড়। এক ছাদের নিচে নানা ধরনের বাসন-কোসনের সমারোহ থাকায় ক্রেতাদের বেশ আগ্রহ দেখা গেছে এতে। স্তরে স্তরে সাজানো নতুন নতুন ডিজাইনের বৈচিত্র্যপূর্ণ তৈজস নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। গৃহস্থালির জিনিসপত্র হওয়ায় আনাগোনা বেশি নারীদেরই। নানা বয়সের ক্রেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী দেখছেন, চলছে যাচাই-বাছাই।
মেলার ২ নম্বর গেটের ডান পাশেই রয়েছে দুরন্ত বাইসাইকেলের ৪ নম্বর মিনি প্যাভিলিয়ন। এখানে সব ধরনের সাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। তাদের বিক্রিও চোখে পড়ার মতো। এখানে প্রতিটি মডেলের ওপর ছাড় আছে। আট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত। বাচ্চাদের সাইকেল বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান দুরন্তর বিক্রেতা গাজী মোহাম্মদ।
দুরন্ত বাইসাইকেল প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপক জসিম বলেন, ‘মেলার শুরু থেকেই আমাদের বিক্রি ভালো। মেলার সময় বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছরেই মেলার শেষের দিকে এসে বেচার পরিমাণটা বৃদ্ধি পায়, তাই কয়েকদিন সময় বাড়ালে তাঁদের ব্যবসায় আরো ভালো হতো বলে তিনি দাবি করেন।
মেলায় দেশীয় মোটরসাইকেলের রোডমাস্টারের শোরুমে ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ শুরু থেকেই। সাশ্রয়ীমূল্যের এসব মোটরসাইকেল ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। বেশ কয়েকটি দেশীয় ব্র্যান্ড সাশ্রয়ীমূল্যে মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে। শ্রেণিভেদে এসব মোটরসাইকেল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকায়।
স্ত্রীসহ মেলায় এসেছেন ব্যাংকার হামীদ খান। তিনি বলেন, শেষ দিকে দাম কিছুটা কম। তাই পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই কিনেছি। আরো কিছু কিনব। মেলায় একসঙ্গে হরেক রকমের পণ্য পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে দামে কিছুটা সস্তা।
মন্তব্য চালু নেই