বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্র মামলায় বাংলাদেশের জয়

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা নিয়ে নেদারল্যান্ড আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায়ে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

বিরোধপূর্ণ আনুমানিক ২৫ হাজার ৬০২ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলের মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ কিলোমিটার বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে মামলার রায় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

এ রায়ের ফলে বাংলাদেশ ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি সমুদ্র অঞ্চল, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সকল ধরনের প্রাণীজ ও অপ্রাণীজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিভাগের সচিব রিয়াল এডমিরাল খোরশেদ আলম প্রমুখ।

স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টায় নেদারল্যান্ডসের হেগ এ অবস্থিত আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত (পিসিএ) এই মামলার রায় দেন। রায় ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত এটি প্রকাশে সালিশি আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় রায় জানতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরের সীমানা নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে আবেদন করে বাংলাদেশ। রুডিগার ওলফ্রামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের বক্তব্য শোনেন। ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধিদল বিরোধপূর্ণ এলাকাও পরিদর্শন করে।

সমুদ্রসীমা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে এই সালিশিতে বাংলাদেশের পক্ষে খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিনিধিত্ব করলেও ভারত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং আইন উপদেষ্টা নিরু চাদা। আর তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের আরেক যুগ্ম সচিব হর্ষবর্ধন সিংলা ও পরিচালক পুনিত আগরওয়াল।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে আট দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ মামলার শুনানি হয়। শুনানির ছয় মাসের মধ্যে রায় ঘোষণার কথা জানায় পিসিএ (পার্মানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন)। দুই দেশের জলসীমা শুরু হবে কোত্থেকে, সেটাই ছিল ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধের মূল বিষয়।

এছাড়া, ভূমিরেখার মূল বিন্দু থেকে সমুদ্রে রেখা টানার পদ্ধতি নিয়েও মতবিরোধ ছিল দুই দেশের মধ্যে।

এর আগে বঙ্গোপসাগরের মালিকানা নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিরোধ মামলাতেও বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছিল সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল (ইটলস)।



মন্তব্য চালু নেই