ভারতে লোকসভা নির্বাচন

বউ দাও ভোট নাও

‘দাদা পায়ে পড়িরে, মেলা থেকে বউ এনে দে’ গানের মতো কাকুতি-মিনতি নেই এ স্লোগানে, আছে স্পষ্ট দাবির সুর। ভারতের হরিয়ানায় নাকি এখন ভোটপ্রার্থী রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ভোটের বিনিময়ে বউ দেয়ার দাবি জানিয়েছে অবিবাহিত তরুণ ভোটাররা। রাজনৈতিক নেতারা বাড়ির দরজায় এসে দাঁড়ালেই নাকি তারা শর্ত রাখছেন, ‘বহু লাও, ভোট পাও’ অর্থাৎ ‘ বউ দাও ভোট নাও’। অবশ্য এমনি এমনি হরিয়ানার অবিবাহিতরা এই দাবি তোলেনি। শেষ পর্যন্ত বউ যোগাড়ের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের এই বিশেষ সময়ে ব্লাকমেইল করছে তারা বিশেষ কারণে। বিষয়টির আড়ালে রয়েছে হরিয়ানার এক বাস্তব সমস্যা যা বড় প্রভাব ফেলবে রাজ্যের জনবিন্যাসে। জানা গেছে, হরিয়ানাই ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে নারী-পুরুষ আনুপাতিক হারের ব্যবধান সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা সবচেয়ে কম। ২০১১ সালে ভারতের আদমশুমারী বলছে, হরিয়ানায় প্রতি এক হাজার পুরুষ পিছু মেয়ের সংখ্যা ৮৭৯ জন। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে চলে আসা প্রকাশ্যে-গোপনে কন্যাভ্রুণ হত্যার কুফল এটি। এবার তাই লোকসভা নির্বাচনে ইস্যুটি সামনে নিয়ে এসেছে স্থানীয় বিবিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুনীল জাগলান। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি ‘অবিবাহিত পুরুষ সংঘ’ নামে নাকি একটি সংগঠন গড়েছেন। কন্যাভ্রুণ হত্যার জেরে রাজ্যে নারী-পুরুষের সংখ্যায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার বিষয়টিতে আলোকপাত করাই উদ্দেশ্য তাদের। লিঙ্গ বৈষম্যের সমস্যার প্রতি রাজনৈতিক নেতাদের নজর কাড়তে চান তারা। জাগলান বলেন, ‘কন্যাভ্রুণ হত্যা এক গভীর সমস্যা হতে চলেছে। এখনই  এর মোকাবিলা করা না গেলে ভবিষ্যতে ফল হবে মারাত্মক। কিন্তু আপনাদের স্লোগানের মধ্য দিয়ে কি বউ পাওয়ার বাসনাই মুখ্য হয়ে ফুটে উঠছে না যা সমস্যার গুরুত্বকে কিছুটা লঘু করে দিতে পারে।’ জাগলান আরো বলেন, ‘বউ দাও ভোট নাও স্লোগানটির মানে কিন্তু এটা নয় যে সব অবিবাহিত ছেলের এখনই  বউ চাই। কিন্তু সমস্যাটির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা রয়েছে এতে। জাগলান ক্ষোভ নিয়ে বলেন, আমআদমি পার্টি বাদে অন্য সব গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীই আমাদের গ্রামে ভোট চাইতে এসেছেন। কিন্তু তাদের কেউই আমাদের দাবি নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি। আসলে রাজনৈতিক দলগুলি সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে ভাবেই না।



মন্তব্য চালু নেই