ফ্রান্স হামলা: আইএস-এর দায় স্বীকার, বাড়ছে জরুরি অবস্থার মেয়াদ

ফ্রান্সের নিস শহরের হামলায় আইএস-এর দায় স্বীকারের খবর দিয়েছে এক ফরাসি মিডিয়া।

আজারবাইজানভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ট্রেন্ড-এর এক খবরে এ কথা জানানো হয়েছে। তবে আইএস-এর ওই কথিত দায় স্বীকারের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে ট্রাক হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা আরও তিন মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ। শুক্রবার সকালে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।

হামলায় এ পর্যন্ত ৮০ জন নিহত এবং বেশ ক’জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বৈশ্বিক জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী বেসরকারী সংগঠন সাইট ইন্টিজেন্স সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় সবার আগে দায় স্বীকারের খবর প্রকাশ করে থাকে। সেই সাইট ইন্টিলিজেন্স-ও এখনও আইএস-এর দায় স্বীকারের ব্যাপারে কিছু জানায়নি। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর সাবেক বিশ্লেষক নাদা বাকোসের মতে হামলাটি আল কায়েদা এবং আইএস ধাঁচের। তিনি বলেন, ‘তাদের একটি প্লেবুক আছে। সেখানে এ ধরনের হামলার উল্লেখ আছে। তারা তাদের অনুসারীদের এ ধরনের সহিংসতা চালানোর উসকানি দিচ্ছে’।

গত বছর নভেম্বরে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি আছে। ইতোমধ্যে সে জরুরি অবস্থা তিন দফা বাড়িয়ে তা ২৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। ইউরো ২০১৬ ফুটবল টুর্নামেন্ট নিরাপদে আয়োজনের কথা মাথায় রেখে শেষবার জরুরি অবস্থার সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু সে জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাস্তিল দিবসে হামলার প্রেক্ষাপটে আবারও তিন মাসের জন্য তা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হলো। আগামী ২৬ জুলাই থেকে বর্ধিত জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে।

ওঁলাদ বলেন, ‘কোনও কিছুই আমাদেরকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াই থেকে দূরে রাখতে পারবে না। ইরাক ও সিরিয়ায় আমরা আমাদের সন্ত্রাসবিরোধী ব্যবস্থা জোরালো করব। যারা আমাদের নিজস্ব ভূখণ্ডে এসে হামলা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের হামলাও অব্যাহত থাকবে’।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বাস্তিল দিবস উদযাপনের জন্য ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাইসের প্রমেনাদে দেজ অ্যাংলেইসে আতশবাজি প্রদর্শনী দেখতে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে একটি ট্রাক ওই জমায়েতের দিকে ছুটে আসে।

স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভি-কে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রাকের ধাক্কায় অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ওই ট্রাকের চালক নিহত হয়েছেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি দুর্ঘটনা ছিল না। ইচ্ছাকৃতভাবেই ট্রাকটি ভিড়ের মধ্যে তুলে দেওয়া হয়। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিএফএম-এর খবরে বলা হচ্ছে ট্রাকের ভেতরে একটি পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে বলে পুলিশ সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। আর ওই পরিচিতিপত্র অনুযায়ীই ট্রাক চালকের নাগরিকত্ব শনাক্ত করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ট্রাক চালকের বয়স ৩১ বছর। তার ফ্রান্স ও তিউনিসিয়ার দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। ওই ট্রাক চালক নিস শহরের বাসিন্দা ছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান



মন্তব্য চালু নেই