পাকিস্তানকে একঘরে করার রাজনীতিতে ধাক্কা খেল মোদি

ভারতের গোয়ায় ব্রিকসের সম্মেলনে দিনভর আলোচনায় পাকিস্তান নিয়ে সুর চড়িয়েও লাভ হলো না নরেন্দ্র মোদির। পাকিস্তানকে একঘরে করতে ব্রিকসের মূল আলোচ্য করে তুলতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত ব্রিকসের ঘোষণাপত্রে জায়গা হয়নি ভারতের দীর্ঘদিনের দাবি ‘সীমান্তপারের সন্ত্রাস’।

পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে সীমান্তপারের সন্ত্রাসকে গোয়ার ঘোষণাপত্রে আনার সব রকম চেষ্টা চালিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু চীন এবং রাশিয়া এতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে মোদির সব প্রচেষ্টা।

সন্ত্রাস প্রসঙ্গে আইএস বা সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন আল নুসরার নাম ঘোষণাপত্রে ঠাঁই পেলেও পাক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই তাইয়েবার নাম জায়গা পায়নি ব্রিকসের ঘোষণাপত্রে। সীমান্তপারের সন্ত্রাস প্রসঙ্গ না-রাখা হলেও আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের সমালোচনা ও তা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছে গোয়ার ঘোষণাপত্রে।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাহায্যে পাকিস্তানকে একঘরে করে রাখার কূটনীতি শুরু করেছিল নয়াদিল্লি। সেই কূটনীতি প্রাথমিকভাবে সফলও হয়েছিল। যার জেরে সার্ক-ভুক্ত প্রায় সবক’টি দেশই ইসলামাবাদে প্রস্তাবিত সার্ক বৈঠক বয়কট করে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছিল।

নয়াদিল্লির পরিকল্পনা ছিল, এরপর গোয়ার বৃহত্তর মঞ্চে লিখিতভাবে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করা। কিন্তু গতকাল রাতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকেই সাউথ ব্লক টের পায়, পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার যে প্রবল প্রয়াস চালানো হচ্ছে, তাতে বেইজিং মাথা চাড়া দিতে পারে। সোমবার ব্রিকসের মঞ্চে মোদির তীব্র পাক বিরোধিতার পরে বলতে উঠে চীনা প্রেসিডেন্ট তা ঘুরপথে বুঝিয়েও দিয়েছেন।

অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে ১৬টি চুক্তি করলেও সদ্য যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে আসা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিখিত ঘোষণায় মস্কো যে সায় দেবে না, তা-ও ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায়। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াশিংটন নিজের স্বার্থে যত বেশি করে ভারতীয় বাজার, অর্থনীতি এবং কৌশলগত দোসর হওয়ার চেষ্টা করছে, ততই মস্কোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে নয়াদিল্লির।



মন্তব্য চালু নেই