নিজের পুরুষাঙ্গ ও শিরা কেটে আত্মহত্যা!

পরিকল্পনা মতো সবাইকে খুন করার পরে আত্মহত্যাই করেছিল কলকাতার হরিনাভির প্রোমোটার শঙ্কর কর্মকার। দেহগুলোর ময়না-তদন্তের পরে এমনটাই ধারণা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের। শুধু তা-ই নয়, তারা বলছেন, পুরুষাঙ্গটিও নিজেই কেটেছিল শঙ্কর!

হরিনাভি ও গরফায় দু’টি আলাদা ফ্ল্যাটে দুই স্ত্রীর আলাদা সংসার ছিল শঙ্করের। দু’টি সংসারেই ছোট দু’টি বাচ্চা। এর বাইরেও অসংযমী জীবনযাপন, বহু মহিলা সংসর্গ তার জীবনে জটিলতা ডেকে আনে বলে দাবি শঙ্করের আত্মীয়দের। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

নিম্নবিত্ত দশা থেকে উঠে এসে পেশাগত ভাবে সফল হয়েও ফের দেনার দায়ে আর্থিক ভাবে বেসামাল হয়ে পড়েছিল শঙ্কর। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞর ব্যাখ্যা, ‘জীবনের এই পরিণতির জন্য প্রথম রিপুর তাড়নাই (কামস্পৃহা) দায়ী বলে হয়তো ধরে নিয়েছিল শঙ্কর। তাই মৃত্যুর আগে নিজের পুরুষাঙ্গটি ছিন্নভিন্ন করে এক ধরনের প্রতীকি প্রতিশোধ নিতে যায় সে।’

পুলিশ জানায়, শঙ্কর বুুধবার রাতে স্ত্রী পৌলমী এবং ছেলে অরিত্রকে হরিনাভির ফ্ল্যাটে খুন করে। তার পরে রাতেই সে চলে আসে গরফার ফ্ল্যাটে। এখানে আরেক স্ত্রী রোহিণী ও তিন বছরের সন্তান ইয়াশিকে খুন করে শঙ্কর। তার পরে নিজেই পুরুষাঙ্গ ও হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করে শঙ্কর। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ফ্ল্যাটেই তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়। সে সময়ে শঙ্করের পুরুষাঙ্গটি তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মিলেছিল।

ময়না-তদন্তের পরে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা রোহিণী নয়, শঙ্কর নিজেই তার যৌনাঙ্গ কেটেছিল। তাদের মতে, অন্য নারীদের সঙ্গে শঙ্করের মেলামেশার কথা জেনে রোহিণী যদি ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলতেন, তা হলে তার (রোহিণীর) হাতের আঙুলে, তালুতে ব্লেডে কাটার চিহ্ন থাকত। কারণ, ব্লেড দিয়ে কেউ যদি কাউকে বারবার আঘাত করেন, তা হলে যিনি ব্লেড চালান তার আঙুলে ও তালুতে ব্লেডে কাটার দাগ থাকতে বাধ্য। রোহিণীর আঙুলে বা তালুতে তা ছিল না। কিন্তু শঙ্করের আঙুলে ও তালুতে সেই সব চিহ্ন মিলেছে।

লালবাজারের গোয়েন্দা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা মিলিয়ে গোটা ঘটনার কালক্রম নিয়ে মোটামুটি একটি সিদ্ধান্তে এসেছেন তারা। -হরিনাভিতে পৌলমী ও অরিত্রকে খুনের সময়ে শঙ্কর মত্ত অবস্থাতেই ছিল। তার পরে চলে আসে গরফায়। রাতভর সেখানেই ছিল। এখানে খুনের ঘটনা সকাল থেকে বেলা ১১টার মধ্যে হয়।

পুলিশ জানায়, হরিনাভি ও গরফার বাড়ি থেকে দু’টি ছুরি মিলেছে। গরফার বাড়ি থেকে দু’টি নতুন ব্লেডও মিলেছে।

এই ঘটনায় তেমন রহস্য না থাকলেও কলকাতা মহানগরে এমন নৃশংস ঘটনার পরে প্রশাসনের উঁচুতলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে লালবাজারের কাছে ঘটনাটি সবিস্তার জানতে চাওয়া হয়। গরফার ঘটনা নিয়ে লালবাজার থেকে একটি রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর দফতর নবান্নেও পাঠানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই