‘ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত ভুল, এতে বিভেদ বাড়বে’

মুসলিমবিরোধী নিষেধাজ্ঞা জারি করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া নির্বাহী আদেশকে ভুল পদক্ষেপ বলে আখ্যা দিলো যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের এই নিষেধাজ্ঞায় কেবল বিভেদ বাড়বে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি কবরবিনের এক প্রশ্নের জবাবে এইসব কথা বলেন থেরেসা মে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তর পর্বে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কছে প্রশ্ন রাখেন। প্রশ্নোত্তরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন থেরেসা মে। সংসদে তিনি বলেছেন, ‘ব্রিটিশ সরকার মনে করে, আমেরিকার এই নীতি ভুল। আমরা এই পথে হাঁটবো না। ছয় বছর স্বরাষ্ট্রসচিব থাকার সময় কখনও এমন নীতি অনুসরণ করিনি। আমরা সত্যিকার অর্থেই মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ভুল। এতে শুধু বিভেদই বাড়বে।’

কয়েকদিন আগে হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠককালে এমন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কোনও আগাম তথ্য পাননি বলেও জানিয়েছেন থেরেসা মে। সংসদে লেবার নেতা করবিনকে ইঙ্গিত করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনি যদি জানতে চান, শরণার্থীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ব্যাপারে আগাম অবহিত ছিলাম কিনা এবং এই আদেশ ব্রিটিশ নাগরিকদের ওপর কতোটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তাহলে আমার উত্তর হচ্ছে- না।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খবরের শিরোনাম হওয়া কিংবা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করা সরকারের কাজ নয়। ব্রিটিশ নাগরিকদের সুরক্ষাকেই আমরা প্রাধান্য দেই। আমরা সেটাই করেছি।’ করবিনকে ইঙ্গিত করে তির্যকভাবে থেরেসা বলেছেন, ‘তিনি হয়তো প্রতিবাদ সমাবেশ পরিচালনা করতে পারেন, কিন্তু আমাকে ভাবতে হয় দেশের নেতৃত্ব নিয়ে।’

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করেই তুরস্ক সফরে যান থেরেসা। শনিবার সেখানে সাংবাদিকরা ওই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে তার অবস্থান জানতে চান। জবাবে থেরেসা জানিয়েছিলেন, সহিংস ইসলামিদের হাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করা উচিত ট্রাম্পের। মে আরও জানান, অভিবাসন নিয়ে এটা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নীতি।

তবে শনিবার শেষ বেলায় লন্ডন ফেরার পর দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নিজ দলের এমপিদের তোপের মুখেও পড়েন তিনি। এর পর থেরেসা মের এক মুখপাত্র জানান, ব্রিটেন ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি দেশটির একান্তই নিজস্ব। যেমন আমাদের নিজেদের করা উচিত। কিন্তু এ ধরনের (নিষেধাজ্ঞা) পদক্ষেপ আমরা সমর্থন করি না। আমরা নতুন এই নির্বাহী আদেশ পর্যবেক্ষণ করছি।

এবার পার্লামেন্টে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমবিরোধী অভিবাসননীতির বিপক্ষে নিজের অবস্থান জানালেন মে।



মন্তব্য চালু নেই