ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠছেন বাংলাদেশি মুনিরা

৩২ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন ফ্রিল্যান্সার মুনিরা আহমেদ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখে পরিণত হয়েছেন। নিউ ইয়র্ক শহরের কুইন্সে বসবাস করেন তিনি। গত শনিবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাখ লাখ নারীর যে প্রতিবাদ আন্দোলন হয়েছে; সেই প্রতিবাদে বাংলাদেশি এই তরুণীর ছবি দেখা যায় সবার হাতে হাতে।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন পতাকার আদলে মাথায় হিজাব পরেছেন তিনি, চোখ-মুখে ফুটে উঠেছে অবাধ্যতার ছাপ। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিখ্যাত পোর্টেট ফটোগ্রাফার শিপার্ড ফেয়রি বাংলাদেশি মুনিরার ওই ছবির পোর্টেট এঁকেছেন। ১০ বছর আগে ছবিটি তুলেছিল মুনিরার বন্ধু রিদওয়ান আদহামি।

ওয়াশিংটন থেকে নিউ ইয়র্কে ফেরার পর মুনিরা আহমেদ ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আপনার মতো আমিও একজন মার্কিনি।’ শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভে অংশ নেন মুনিরা। নিউ ইয়র্কে তিনি বলেন, ‘আমি একজন মার্কিনি এবং মুসলিম। এ দুটি বিষয় নিয়ে আমি খুবই গর্বিত।’

‘উই দ্য পিপল’ শিরোনামে অ্যামপ্লিফায়ার ফাউন্ডেশনের একটি প্রকল্পের হয়ে কাজ করছেন শিপার্ড ফেয়রি। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিষেকের আগে একই ধরনের পোর্টেট ছবি তুলেছিলেন ফেয়রি। ওবামার সেই ছবির সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গ এক বালক ও ল্যাটিনো এক তরুণীর ছবি জুড়ে দিয়ে শিরোনাম করেছিলেন ‘উইমেন আর পারফেক্ট’।

তবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুনিরা আহমেদের ছবি নারী আন্দোলনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে; হয়ে উঠেছে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহর পোস্টারে ঢেকে যায়। দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক ‘দি নিউ ইয়র্ক টাইমস’ ও ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’সহ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রের পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে ছাপা হয় মুনিরার পোর্টেট সেই ছবি।

মুনিরা আহমেদ বলেন, ছবিটি যে বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে তা সম্মানের বিষয়। এতে বিরোধী কিছু নেই। তিনি বলেন, ছবিটি বলছে, আপনার মতো আমিও একজন আমেরিকান।

ওয়াশিংটনের প্রতিবাদে তিনি বলেন, ছবির তরুণীই যে আমি সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানার পর কংগ্রেসের একজন নারী সদস্য অামার কাছে এসেছিলেন। আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম কারণ আমি ধারণা করেছিলাম মানুষ মনে করবে এটা অন্য কেউ হবে (যে হিজাব পড়েছে)। প্রতিবাদে আমি হিজাব পড়ে হাজির হয়নি।

মুনিরা আহমেদ বলেন, একটি মুসলিম ব্লগে ছবিটি পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই লিখেন, অনেক মুসলিম দেশে যুক্তরাষ্ট্র যখন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে; তখন একজন মার্কিনি ও একজন মুসলিম হওয়ার জন্য ছবিটি কী বুঝায়?

মুনিরা আহমেদ বেড়ে উঠেছেন নিউ ইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকায়। জ্যামাইকা এস্টেটস গেটের কাছে বেড়ে উঠেছেন সদ্য শপথ নেয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায় মুনিরার পরিবার। মুনিরার জন্ম জ্যামাইকাতে। পরিবারের সদস্যদেরসহ বর্তমানে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাস করেন বাংলাদেশি মুনিরা।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।



মন্তব্য চালু নেই