ছিঃ তালেবান, ছিঃ!

তালেবানের রক্তনেশায় ঝরে গেল শতাধিক শিশুশিক্ষার্থীর প্রাণ। সিন্ধুনদের জনপদ ভেসে গেছে নিষ্পাপ শিশুদের রক্তে। কাঁদছে পাকিস্তান, বিমুঢ় গোটা বিশ্ব। দিবালোকে গণহত্যার বর্বরতার এই নজির সাম্প্রতিক বিশ্বে বিরল।

যে শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ, তাদের প্রাণ কেড়ে নেয় যেসব রক্তপিপাসুরা, তাদের কি কোনো নাম আছে? এই বর্বর জঙ্গিরা শুধু শিশুদেরই খুন করেনি, খুন করেছে মানবতাকেও। তারা রক্ত ঝরিয়েছে মায়ের বুকে, চাঁদ-তারার পতাকায় তারা লেপটে দিয়েছে শিশুর তাজা রক্ত। এরা মানুষ হতে পারে না। এরা পশু, দানব।

খুনি তালেবানেরা বন্দুক তাক করে পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিক আর্মি পাবলিক স্কুলের ৫০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে। উন্মাদ জঙ্গিদের বুলেটে শীতের পাতার মতো ঝরে গেছে ১০০-এরও বেশি শিশুর জীবন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জঙ্গিরা হামলা চালায় স্কুলটিতে। এরপর জীবন নেওয়ার উন্মত্ততায় মেতে ওঠে। কী বিভৎস! এমন নারকীয় হামলা কল্পনা করাও কষ্টের।

ডন অনলাইনের সবশেষ খবরে জানানো হয়েছে, তালেবান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০ জনে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে কমপক্ষে ৫০ জন। স্বজনদের কান্নায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে আকাশ। সন্তান হারানো মা-বাবার আর্তনাদে হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছে পাকিস্তানের বাতাসে। তালেবানের এ কেমন প্রতিশোধ? ছিঃ তালেবান, ছিঃ!

পাকিস্তানে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পর গোটা বিশ্বে শোকের ছায়া পড়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ জাতিসংঘ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। সন্তান হারানো বাবা-মাকে সমবেদনা জানিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ঘোষণা করেছেন তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক।007700-1418718029

পাঁচ-ছয়জন তালেবান জঙ্গির হাতে ১৩০টি প্রাণের সমাপ্তি, এ যেন বর্বরতার নতুন শুরু। যে শিশুরা শিক্ষাগ্রহণের জন্য স্কুলে গিয়েছিল, তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হলো! বোমা ফাঁটিয়ে তাদের জীবন নেওয়া হলো! শিশু গণহত্যায় এ এক নারকীয় নজির।

হায় রে পাকিস্তান! এই পাকিস্তানে এখন স্কুল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বোমা মেরে শিশুশিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়। মেয়েশিশুদের স্কুলে যেতে দেওয়া হয় না। অশিক্ষা-কুশিক্ষায় জঙ্গি তৈরির কারখানা খোলা হয়। কিন্তু এত বড় প্রাণহানির দৃষ্টান্ত এর আগে কখনো ছিল না দেশটিতে। এবার তা শুরু হলো।

প্রশ্ন জাগে, কোথায় যাচ্ছে পাকিস্তান? আগেই তার ভাগ্যে জুটেছে ব্যর্থ রাষ্ট্রের তিলক। হয়তো এবার পরিত্যাক্ত কোনো জনপদের নাম হতে যাচ্ছে পাকিস্তান। যেখানে মানুষ থাকে না, থাকে জঙ্গিরা।



মন্তব্য চালু নেই