গত একশ বছরে শান্তিপূর্ণ ২০১৫ সাল

শেষ হতে চলেছে ২০১৫ সাল। নানা ঘটনা আর দুর্ঘটনায় পূর্ণ ছিল বছরটি। বিভিন্ন দেশে পরাশক্তিগুলোর ব্যারেল বোমা হামলা, আইএসের শিরশ্ছেদ আর প্যারিস হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে।

তবে এতসব সত্ত্বেও নিকট অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় এই বছরটি ছিল অনেক কম সহিংসতাপূর্ণ। এমনটাই মনে করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিশারদ স্টিভেন পিঙ্কার। রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নিকট অতীতের তুলনায় চলতি বছর যুদ্ধ ছিল অনেক কম এবং যুদ্ধের ভয়াবহতাও ছিল কম, সন্ত্রাসবাদ ছিল সামান্য আর ইউরোপের শরণার্থী সমস্যাও নতুন কিছু নয়।

২০১১ সালে বেস্ট সেলার খেতব পাওয়া ‘দ্য বেটার অ্যাঞ্জেলস অব আওয়ার ন্যাচার’ বইয়ের এই লেখক বলেন, শুধু গত পাঁচ বছরেই চাদ, পেরু, ইরান, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং অ্যাঙ্গোলার সংঘাত শেষ হয়েছে। সফলভাবে চলছে কলম্বিয়ার শান্তি আলোচনা।

বেশিরভাগ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের তুলনায় ২০১৫ সাল ছিল শান্তিপূর্ণ। এমনকি সাম্প্রতিক শতকগুলোর তুলনায়ও। তবে গত দুই বছরে সহিংসতাপূর্ণ মৃত্যুর ঘটনা সামান্য বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।

সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নরওয়ের পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যের বরাত দিয়ে পিঙ্কার জানান, দীর্ঘদিনের সহিংসতা প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, ইউরোপে গত ৫০০ বছরের ইতিহাসে, প্রতি বছরই দুইটি করে নতুন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এর সংখ্যা ছিল শূন্য।

তবে পিঙ্কারের এসব বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ টিমোথি স্নাইডার। তার বক্তব্য থেকে আশান্বিত হওয়ার মতো কিছু নেই বলেও মনে করেন স্নাইডার।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, রাষ্ট্রগুলো ভেঙে পড়ছে ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাচ্ছে।’

তার মতে, ‘আমরা যদি মনে করি শান্তি এমনি এমনি আসবে, তবে বড়জোর আমরা এটা মনে করে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারি।’

স্নাইডার বলেন, সিরিয়াতে আসাদ বাহিনীর নিষ্ঠুরতা, জিহাদিদের নৃশংস তৎপরতা এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘রাজনৈতিক হঠকারিতার’ বিষয়ে পিঙ্কার কিছু বলেননি।

তবে তিনিও মনে করেন, যুদ্ধের ভৌগলিক প্রসারণ কমে আসছে। তিনি বলেন, ‘১৯৪৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে হওয়া যুদ্ধগুলো গ্রিস, চীন, মোজাম্বিক, আলজেরিয়া, তিব্বত, গুয়াতেমালা, উগান্ডা এবং পূর্ব তিমুরসহ মোট ৩০টি দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে মারা গিয়েছিল এক লাখেরও বেশি মানুষ।’



মন্তব্য চালু নেই