কোথায় স্বাধীনতা সংগ্রাম, কোথায় টাকা চুরি
জেলে গিয়েছেন জওহরলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষ বসুও। সব নেতাই জেলে যান। রাজনীতিতে এটা যেন অনিবার্য পরিণতি। এই ভেবে লজ্জা অপমান থেকে বাঁচার
চেষ্টা করছেন সারদার টাকা চুরির জন্য অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণমন্ত্রী তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। এমন আত্ম শান্তনা শুনে মদনের এক ভক্ত আড়ালে বলে উঠেন, ‘কোথায় স্বাধীনতা
সংগ্রাম, আর কোথায় সারদার টাকা চুরি।’
শুক্রবার আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘মদনবাণী: জেলে গিয়েছেন গাঁধীও’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এমন সংবাদ জানানো হয়।
মদন বলছেন, ‘সব নেতাই জেলে এটাই স্বাভাবিক। জওহরলাল নেহরু, গাঁধীজি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সবাই জেলে গিয়েছেন।’
এ কথা শুনে হতবাক তার ভক্তরাও। আড়ালে একজন বলেই ফেলেন, ‘কোথায় দাদা, আর কোথায় গাঁধী-সুভাষ! কোথায় স্বাধীনতা সংগ্রাম, আর কোথায় সারদার টাকা চুরির অভিযোগ। কীসে আর কীসে!’
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল ১১টায় মদন মিত্রকে সারদা মামলায় সাক্ষী হিসেবে জেরার জন্য ডেকেছে সিবিআই। অথচ বৃহস্পতিবার মদন মিত্রের কথাবার্তা শুনলে মনে হবে,
তিনি ধরেই নিয়েছেন, জেলে যাচ্ছেনই! আর সেই কারণেই হয়তো গাঁধী-নেহরু-সুভাষের শরণ নেয়া। দলীয় অফিসে গিয়ে কর্মীদের সাহস জোগানোর চেষ্টা। স্বাধীনতা সংগ্রামের
প্রাতঃস্মরণীয় তিন স্তম্ভের জেলযাত্রার কথা বলে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা। এবং প্রাণপণে বোঝানোর চেষ্টা, ‘দাদা’ জেলে যেতে হলে যাবেন। কিন্তু এ নিয়ে তিনি তেমন উদ্বেগে
নেই।
কিন্তু সে কথায় কর্মীরা ভরসা পেলেন কিনা সেটাই প্রশ্ন। আর মদন নিজেই বা কতটা ভরসা পাচ্ছেন? মদনের ‘প্যানিক-অ্যাটাক’-এর পূর্ব ইতিহাসের কথা মাথায় রেখেই তার পরিচিত কেউ কেউ ঈষৎ চিন্তিত। এসএসকেএমে থাকার সময় সতীর্থ সাংসদ সৃঞ্জয় বসুর গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পেয়ে প্রায় দম আটকে গিয়েছিল মদনের। বলেছিলেন, ‘মনে হচ্ছে কেউ যেন গলা টিপতে আসছে।’
তাই পরিচিতরা বলছেন, সিবিআই-সাক্ষাতের সময় যত এগিয়ে আসছে, নিজের স্নায়ুর সঙ্গেই লড়াইটা ততই কঠিন হয়ে উঠছে মদনের। তাই খুঁজছেন ভরসার খড়কুটো।
মন্তব্য চালু নেই