কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ শেষ

কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ৫ম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ হয়। এসময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকদের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে কয়েক’শ।

অনিয়মের অভিযোগে বেশকিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচনী কর্মকর্তা। কারচুপি ও ব্যালটে প্রকাশ্যে সিল মারা, এজেন্টদের নির্বাচন কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার প্রতিবাদে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন।

কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে জোর করে সিল মারা, ছিনতাই, বিরোধী প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, প্রতিন্দ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলার অসংখ্য খবরের পরও দুপুরে ইসি কার্যালয়ে সংবাদকর্মীদের কমিশনার আবু হাফিজ বলেছেন, ভোট মোটামুটি ‘ভালো’ হচ্ছে। যেখানে অনিয়মের খবর পাওয়া যাচ্ছে সেখানে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দিচ্ছেন কর্মকর্তারা।

এদিকে আমাদের চট্টগ্রাম প্র্রতিনিধি জানিয়েছে, কর্ণফুলী থানার বড় উঠান ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন ইউপি সদস্য প্রার্থী নিহত হয়েছেন। ইয়াছিন নামের ওই প্রার্থীকে ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রতিপক্ষের লোকজন ছুরিকাঘাত করে খুন করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, বেলা ১১টার দিকে পুলিশের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ‘রাজগঞ্জ সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা’ কেন্দ্রের বাইরে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। তার নাম সৈয়দ আহমদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, দুর্বৃত্তদের একটি দল এ কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালটবক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় পুলিশ ধাওয়া দেয়। এ সময় সৈয়দ আহমদ ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হচ্ছিলেন। চারদিকে দৌড়াদৌড়ি দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পালানোর সময় দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের ভাতিজা বেলায়েত হোসেন জানান, তার চাচা ভোট দিয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশ কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলাকরীদের ধাওয়া করে। এ সময় তিনি ভয়ে দৌড় দিতে গিয়ে দেয়ালের সঙ্গে আঘাত পেয়ে মারা যান।

এদিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫ জন।

অপরদিকে, বিএনপি দাবি করছে এখন পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ৬জন মারা গেছে। আহত হয়েছে ৩ শতাধিক। শনিবার বেলা ২টার পরে রাজধানীর শেরে বাংলানগরস্থ কার্যালয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খাঁন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ইসি (নির্বাচন কমিশন) জেগে ঘুমাচ্ছে। জেনে-শুনে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আজকে সহিংসতায় ইতোমধ্যে ৬ জন নিহত হয়েছে। ভোট কেন্দ্র দখল, জালভোট, কারচুপি অব্যাহত রয়েছে। এটা ভোটের নামে খেলা হচ্ছে, তামাশা চলছে।



মন্তব্য চালু নেই