কুকুরের দুধ পান করে সেলিম !
অবাক হলেও সত্যি যে, কুকুরের দুধ পান করে বেঁচে আছে এক শিশু। শিশুটি বাবা-মায়ের আদরবঞ্চিত। নাম সেলিম। সেলিমের বয়স এখন ১০ বছর। নিয়তির নির্মম পরিহাসের শিকার হয়ে কুকুরের দুধপান করে বেঁচে আছে সে।
সেলিমের বয়স তখন মাত্র ছয় মাস। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের পঞ্চানন্দপুর গ্রামের লাল চাঁন তার স্ত্রীকে তালাক দেন। সেই সময় মা শিশু সেলিমকে নিয়ে বজরাটেক সবজা স্কুলপাড়া গ্রামে বাপের বাড়ি চলে আসেন। কিছুদিন পরই সেলিমকে রেখে মা বিয়ে করে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে চলে যান চট্টগ্রামে।
এরপর অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা শুরু হয় সেলিমের। ওর দরিদ্র নানা ভ্যান চালিয়ে কোনোরকমে অভাবী সংসার চালায়। ফলে প্রয়োজনীয় খাবারটুকুও সেলিমের ভাগ্যে জোটে না। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সেলিম তখন থেকেই এ-বাড়ি ও-বাড়ি গিয়ে নিজের খাবারের চেষ্টা চালাতে থাকে।
একপর্যায়ে সে ক্ষুধা মেটাতে কুকুরের স্তনে মুখ দিয়ে দুধ খাওয়া শুরু করে। আর কুকুরও তার অন্য সন্তানের মতো করে দুধ খাওয়াতে থাকে সেলিমকে। এটা দেখে কেউ খুব মজা পায়, কেউ বা অদ্ভুত তাকিয়ে রহস্য খোঁজে। কিন্তু দুমুঠো খাবার দিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন সেলিমের অবলম্বন এলাকার মা-কুকুরগুলো।
ভোলাহাট উপজেলার মেডিকেল মোড়ে দেখা হয় সেলিমের সঙ্গে। দুই টাকার আবদার করে সে। এখানকার লোকজন জানান, সেলিম কুকুরের দুধ খেয়ে বড় হয়েছে। তাকে জিজ্ঞেস করতেই বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে সে।
কুকুরের দুধ খাওয়ায় শিশুটির কোনো সমস্যা হতে পারে কি না, এ বিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পাগলা কুকুর জলাতঙ্ক জীবাণু বহন করে। সেসব কুকুরের দুধ খেলে সমস্যা হওয়ার কথা কিন্তু যেহেতু দীর্ঘদিন কুকুরের দুধ খেয়েও শিশুটির কোনো ক্ষতি হয়নি, ফলে ওই সব কুকুর জলাতঙ্ক জীবাণুবাহী ছিল না। তবে এখন আর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
মন্তব্য চালু নেই