কাজের চাপে কর্মীর আত্মহত্যা, বিজ্ঞাপনী সংস্থা প্রধানের পদত্যাগ

কাজের চাপে এক কর্মীর আত্মহত্যার এক বছর পর ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ বিজ্ঞাপনী সংস্থা জাপানের ডেন্টসু ইনকর্পোরেশনের প্রধান তাদাশি ইশি।

জাপানের শ্রমআইন লঙ্ঘন করে ২৪ বছর বয়সী ওই কর্মীকে দিয়ে অবৈধভাবে অতিরিক্ত সময় কাজ করানোর জন্য ডেন্টসু এবং তার কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে কর্তৃপক্ষ সুপারিশ করার পর বুধবার রাতে তাদাশি পদত্যাগের কথা জানান।

নিহত কর্মীর নাম মাতসুরি তাকাহাশি। জাপানের মর্যাদাকর টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এ তরুণী ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ক্রিসমাসের দিনে ডেন্টসুর একটি ডরমিটরিতে আত্মহত্যা করেন।

মাতসুরি ওই বছরের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেন। এরপর প্রতিমাসেই তাকে একশ’ ঘণ্টারও বেশি ওভারটাইম করতে হতো।

তিনি কাজের চাপ সইতে না পেরে টুইটারে মৃত্যুর ইচ্ছার কথা জানান। তিনি বলেন, যদি তিনি মারা যান তবে ‘সুখের ব্যাপার’ হবে।

জাপানে কাজের চাপে শত শত মানুষের মৃত্যুবরণকে বলা হয় ‘কারুশি’। কারুশি আক্রান্তরা স্ট্রোক, হৃদক্রিয়া বন্ধ এবং আত্মহতা করে মারা যান।

মাতসুরির মৃত্যুর ঘটনায় ডেন্টসু প্রেসিডেন্ট তাদাশি বুধবার বলেন, আগামী মাসে তিনি পদত্যাগ করবেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কখনোই মাত্রাতিরিক্ত কাজ করানো উচিত নয়। আমি গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং এই ঘটনার দায় অনুভব করছি।

ডেন্টসু প্রধান বলেন, মাতসুরির আত্মহত্যার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করে জানুয়ারির বোর্ড সভায় প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করব।

জাপানে কর্মীদের মাত্রাতিরিক্ত কাজ করানোর ব্যাপারটি অনেকটা স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাড়তি সময়ের কাজ কর্মীদের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

গত অক্টোবরে প্রকাশিত একটি সরকারি সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে যারা দীর্ঘসময় ধরে কাজ করেন তাদের প্রতি পাঁচজনে একজন গুরুতর মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মন্ত্রিসভা অনুমোদিত কারোশি সংক্রান্ত প্রথম জাতীয় শ্বেতপত্রের অংশ হিসেবে এই সমীক্ষাটি প্রকাশ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই