সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন
কলারোয়া পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপির আক্তারুল মেয়র নির্বাচিত
শংকা আর সম্ভাবনার দোলাচলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো কলারোয়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গাজী আক্তারুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ৫হাজার ৪’শ ৫৭ ভোট। ৪হাজার ৯১ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত হোসেন। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী আমিনুল ইসলাম লাল্টু পেয়েছেন ৩হাজার ৬’শ ৩৫ ভোট। জাতীয়পার্টির মনোনীত প্রার্থী মুনছুর আলী পেয়েছেন ১’শ ১৫ ভোট। শতকরা ৭১ দশমিক ৪৭জন ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করেছেন। পৌরসভার মোট ১৮হাজার ৫’শ ২৫ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ১৩হাজার ২’শ ৪০টি। বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়েছে ২৯৬টি ভোট।
৩০ডিসেম্বর বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিরতীহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর পদে সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডে (৪নং, ৫নং ও ৬নং ওয়ার্ড) ১হাজার ৯’শ ৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সন্ধ্যা রানী বর্মণ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সেলিনা পারভীন পেয়েছেন ১হাজার ৩’শ ৯৬ ভোট। সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডে (৭নং, ৮নং ও ৯নং ওয়ার্ড) ১হাজার ৬’শ ৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন লুৎফুন নেছা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি তৃতীয় লিঙ্গের দিথী পেয়েছেন ১হাজার ৫’শ ১২ ভোট।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে এসএম মফিজুল হক ৫’শ ৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জিএম শফিউল আলম পেয়েছেন ৫’শ ভোট। ৩নং ওয়ার্ডে ৬’শ ২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রফিকুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি এনায়েতুল্লাহ খান টুন্টু পেয়েছেন ৬’শ ১০ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে মেজবাহ উদ্দীন লিলু ৪’শ ৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মাগফুর রহমান রাজু পেয়েছেন ৩’শ ২১ ভোট। ৫নং ওয়ার্ডে শেখ জামিল হোসেন হোসেন ৯’শ ৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুস সবুর পেয়েছেন ২’শ ৩৮ ভোট। ৬নং ওয়ার্ডে আলফাজ উদ্দীন ৯’শ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আবু জাফর সরদার পেয়েছেন ৬’শ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর হোসেন ১হাজার ২’শ ৪৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাইদুর রহমান মল্লিক পেয়েছেন ৪’শ ৮৭ ভোট। ৮নং ওয়ার্ডে শেখ ইমাদুল ইসলাম ৮’শ ৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হারুন-অর-রশীদ পেয়েছেন ৬’শ ৭২ ভোট। ৯নং ওয়ার্ডে ৫’শ ৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আকিমুদ্দিন দফাদার। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুল লতিফ সরদার পেয়েছেন ৪’শ ২০ ভোট।
সন্ধ্যার পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ আলী বেসরকারি ভাবে এ ফলাফল ঘোষনা করেন।
এর আগে দিনভর প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে কর্মী-সমর্থকদের উৎসুক উৎসবের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কেন্দ্রগুলোর পাশ্ববর্তী এলাকা ছেয়ে যায় প্রার্থীদের পোস্টারে। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষনিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন। ইউএনও’র পাশাপাশি একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বে।
এছাড়াও সাতক্ষীরার ডিসি নাজমুল আহসান, এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর পিপিএম (বার), এডিশনাল এসপি মীর মোদদাছের হোসেনসহ ডিবি পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা নিরাপত্তা ও ভোট সুষ্ঠু হওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শণ করেন ও দায়িত্বে ছিলেন।
সকাল ৮টার আগেই অনেক ভোটার ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হন। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে সাথে ভোটারদের উপস্থিতি আরো বৃদ্ধি পায়। দুপুর ২টার আগেই প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ভোটার তাদের ভোটারধিকার প্রয়োগ করেন।
পৌর নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা আহমেদ আলী জানান, কলারোয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে ৬৫টি ভোটকক্ষে ৯জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৬৬টি জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১২৬ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বশীলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মেয়র পদে আ.লীগের আমিনুল ইসলাম লাল্টু, বিএনপির আক্তারুল ইসলাম, জাতীয়পার্টির মুনছুর আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া দুটি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫ জন ও ৮টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সংরক্ষিত আসনের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর পদে ফারহানা হোসেন এবং সাধারণ আসনে ২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই