কর্মক্ষেত্রে বেশি হয়রানি ভারতীয় নারীরা!

জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোতে এক তৃতীয়াংশ নারীই কর্মক্ষেত্রে যৌনতাসহ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। তবে এদের মধ্যে তুরস্ক, আর্জেন্টিনা আর ভারতের নারীরাই এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে। যৌথভাবে ওই জরিপটি পরিচালনা করেছে ‘থমাস রয়টার্স ফাউন্ডেশন’ এবং ‘দা রকফেলার ফাইন্ডেশন’।

সংস্থা দু’টির জরিপ অনুযায়ী, জি-২০ জোটের দেশগুলো আর্থিকভাবে সফল হলেও নারীদের জন্য নিরাপদ কর্ম পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই জোটের ২৯ শতাংশ নারীই কর্মক্ষেত্রে মৌখিক বা শারীরিকভাবে হেনস্থার শিকার হয়ে থাকেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা অধিকাংশ নারীই কর্মক্ষেত্রের হয়রানি নিয়ে সোচ্চার হতে চান না।

এই জোটের দেশগুলোর মধ্যে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার তুরস্ক, আর্জেন্টিনা আর ভারতীয় নারীরা। অন্যদিকে কর্মক্ষেত্র নিয়ে সবচেয়ে কম অভিযোগ তুলেছেন রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের নারীরা।

২০১২ সালে দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুর পর থেকে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠেছে ভারতীয় নারীরা। ফলে জি-২০ জোটের দেশগুলোর মধ্যে ভারতীয় নারীরাই এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন। দেশটিতে কর্ম পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৫৭ ভাগ নারী। এক চতুর্থাংশ বা ২৭ ভাগ নারী প্রত্যক্ষভাবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন মোট ৫৩ ভাগ নারী। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অবস্থান।

জোটভুক্ত দেশগুলোর সাড়ে নয় হাজারের বেশি নারীদের ওপর জরিপ চালিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান এবং বেতন বৈষম্য নিয়েও জি-২০ দেশগুলোতে রয়েছে নানা অনিয়ম। যদিও ২০১৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জোটের নেতারা ২০২৫ সালের মধ্যে কর্মজীবী নারী ও পুরুয়দের বিরাজমান বৈষম্য কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্তমানে দেশগুলো কর্মজীবী পুরুষের সংখ্যা ৮২ ভাগ হলেও নারীদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা মাত্র ৫৬ ভাগ। নারী ও পুরুষ কর্মচারীদের বেতন নিয়েও রয়েছে নানা বৈষম্য। প্রতি ১০ জন নারীর মাত্র চারজন নারী পুরুষ সহকর্মীদের সমান বেতন পেয়ে থাকেন।

প্রসঙ্গত, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গড়ে ওঠেছে এই জোট।



মন্তব্য চালু নেই