ইকুয়েডরে ভূমিকম্প : মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩

ইকুয়েডরে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছে ১০ হাজার সেনা এবং ৩ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় উদ্ধার কাজ চলছে।

বিবিসি অনলাইনের এক খবরে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইকুয়েডরের স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এতে প্রতিবেশী কলম্বিয়াও কেঁপে ওঠে। তবে কলম্বিয়ায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইকুয়েডরের উত্তর-পশ্চিম উপকূলের কাছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। যে কারণে ওই অঞ্চলে হতাহতের সংখ্যা বেশি। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আসা শুরু করেছে।

ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া তার সবশেষ টুইটে মৃতের সংখ্যা ২৩৩ বলে জানিয়েছেন। ইতালি সফর সংক্ষেপ করে তিনি দেশে ফেরার পথে এ টুইট করেছেন। এর আগে তিনি তার দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। একইসঙ্গে দেশের মানুষকে ‘শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ’ থাকার আহ্বান জানান।

ইকুয়েডরের ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্জ গ্লাস বলেছেন, ‘খুবই কঠিন মুহূর্তে আমরা।’ বিভিন্ন জেলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে লোকজন আটক পড়ার তথ্য পেয়েছি আমরা। তাদের উদ্ধারে প্রস্তুত আমরা।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় হেলিকপ্টার ও বাসযোগে সেনাদের পৌঁছানো হচ্ছে। তবে ভূমিধসের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় লোকজন নিজেরা উদ্ধার কাজ করছে। তবে প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকায় তারা সঠিকভাবে উদ্ধার কাজ চালাতে পারছে না।

জরুরিভিত্তিতে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা শুরু হয়েছে। ভেনেজুয়েলা ও মেক্সিকো থেকে প্রথম দফায় ত্রাণসহায়তা ইকুয়েডরে পৌঁছেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সেবাসংগঠন ইকুয়েডরে ত্রাণ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

এ ভূমিকম্পে ৫০০ শতাধিক লোক আহত হওয়ার প্রাথমিক খবর পাওয়া গেলেও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি। দেশজুড়ে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সহ¯্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি দেশটির দকিণাঞ্চলে একটি সেতু ধসে পড়েছে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী পৌরসভা পেডেরনালেসের মেয়র গ্যাব্রিয়েল আলসিভার জানিয়েছেন, পুরো শহর তছনছ হয়ে গেছে। আমরা আমদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করছি। কিন্তু করার মতো তেমন কিছু নেই। তবে শহরজুড়ে লুটের ঘটনা বেড়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে মান্টায়। এখানকার এক নারী বলেছেন, ‘বাড়ির তৃতীয়তলা ধসে পড়ে আমাদের ওপর। আমার পরিবার, আমার মেয়ে, আমার সন্তানেরা সবাই ওখানে। তারা সবাই এখানে, অনেক মানুষ। হে সৃষ্টিকর্তা, সাহায্য পাঠাও।’

শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে বিদ্যুৎ ও গ্যাসসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, উপকূলীয় মুসিন শহরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ভূপৃষ্ট থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথমে ৪ দশমিক ৮ এবং কয়েক মিনিট পরে ৭ দশমিক মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৯৭৯ সালের পর এটি ইকুয়েডরে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প।



মন্তব্য চালু নেই