আলেপ্পো ঘিরে যৌথ বাহিনীর আগ্রাসী পরিকল্পনা

সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে আলেপ্পো অন্যতম। পৃথিবীর অনেকগুলো প্রাচীন নগরীর মধ্যে একটি হওয়া ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের ভৌগোলিক রাজনীতির মাঠে আলেপ্পো শহরের গুরুত্ব মোটামুটি সকল পক্ষের কাছেই সমান। তাইতো ইসলামিক স্টেট বাহিনী সিরিয়ার রাকা শহরের পরপরই কয়েকবার আক্রমনের মধ্য দিয়ে আলেপ্পোর বিশাল অংশ দখল করে নিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়া নামার পর চলছে দখলকৃত শহরগুলো পুনরায় দখল করার প্রক্রিয়া। আর সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই খুব জলদিই আলেপ্পোতে ইরানি সেনাবাহিনী ও হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সম্বনয়ে গঠিত বাহিনী নিয়ে স্থল অভিযান চালাতে যাচ্ছে সিরীয় বাহিনী।

ইতোমধ্যেই তুরস্কের সীমান্তবর্তী আলেপ্পো শহরের একাংশ সিরীয় সেনাবাহিনীর দখলে আছে। একদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী অংশ এবং অন্যদিকে ইসলামিক স্টেট বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। রাশিয়ার বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই মূলত, লেবাননের হিজবুল্লাহ গেরিলাদের উদ্যোগে আলেপ্পো উদ্ধারে নতুন পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। সিরীয় সেনাবাহিনীর সহায়তার জন্য হিজবুল্লাহর এলিট বাহিনী এবং সহস্রাধিক ইরানি সেনা সিরিয়াতে পৌছেছে। এবিষয়ে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘এটা বেশ বড় যুদ্ধ হতে যাচ্ছে। তাই ওই এলাকাটি যে বেসামরিক মানুষ মুক্ত আছে সেটা আমাদের নিশ্চিত হতে হবে। সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে অনেক সহায়তা করা হচ্ছে।’

তবে কবে নাগাদ এই অভিযান চালানো হতে পারে, সেবিষয়ে সিরিয়া এবং ইরানের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, হামার অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই আলেপ্পো অভিযানে নামনে যৌথবাহিনী, আকাশপথে হামলার জন্য থাকবে রাশিয়ার দুর্ধর্ষ জঙ্গি বিমান সুখয়। চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে রাশিয়ার চালানো বিমান হামলায় ইসলামিক স্টেট বাহিনীর অনেকগুলো অস্ত্রাগার ধ্বংস হয়ে যায়। অন্যদিকে, আসাদ সরকার বিরোধীদের সম্প্রতি ৫০ টন গোলাবারুদ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও রাশিয়া দাবি করছে, এই অস্ত্র বিদ্রোহীদের হাত ঘুরে ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের হাতেই যাবে।

সম্প্রতি সিরিয়ার কুর্দি বাহিনী দীর্ঘদিনের চেষ্টার ফলে আরবের কিছু বিচ্ছিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। এমন একটা সময়ে এই মিত্রতা স্থাপন করা হলো, যখন ইসলামিক স্টেটও যুদ্ধের কৌশলগত দিক বিবেচনায় বিবদমান দলগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করেছিল। এই চেষ্টার অংশ হিসেবেই তারা নুসেরা ফ্রন্ট ও আরও কয়েকটি সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেছে। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিষয়ক অনেক গবেষকের মন্তব্য হলো, নুসেরা ফ্রান্ট কার্যত আলকায়েদার ফ্রন্ট হলেও এটি ইসলামিক স্টেটের হয়েই কাজ করবে, অথচ আলকায়েদা ঘোষণা দিয়ে ইসলামিক স্টেটের বিরোধীতা করেছে।



মন্তব্য চালু নেই