আলিবাবার সাক্ষাৎকার নিলেন ওবামা!

মার্কিন দেশের প্রেসিডেন্ট বলে কথা, সারা বিশ্ব তার সাক্ষাৎকার নেওয়ায় উন্মুখ। কিন্তু অন্যরা তার সাক্ষাৎকার নেবেন কি, তিনি নিজেই সমস্ত নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাক্ষাৎকার নিতে বসে গেলেন চীনা ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আলিবাবার বিলিয়নিয়ার মালিক জ্যাক মা’র।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আজ বুধবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাতে একটি এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলন চলাকালে এই ব্যাতিক্রমি সাক্ষাৎকারের জন্য হঠাৎ কিছু সময় বিরতি নেন এবং সভাকক্ষের আলোচনার ভঙ্গিতে ইন্টারনেট ধনী জ্যাক মা এবং একজন ফিলিপিনো ব্যবসায়িক উদ্যোক্তার উদ্দেশে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।

আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান জ্যাক মা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন বিদেশী অর্থনীতিতে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন। সাক্ষাৎকারে নানান ব্যাবসায়িক কথার ফাঁকে ওবামা খুব স্বাভাবিক ভাবে এই কোটিপতির সাথে স্বভাবসুলভ রসিকতা করেন।

তাদের এই আলোচনায় সরকার এবং সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তরুণ ব্যবসায়িক উদ্যোক্তারা কিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেতে পারেন সেটা উঠে আসে।

রসিকতায় জ্যাক মাও কম যান না, তিনি তরুণদের পক্ষ নিয়ে পাল্টা জবাবে বলেন, এক্ষেত্রে সরকারের কাজ খুব সহজ, এদের জন্য ট্যাক্স একেবারে উঠিয়ে দিতে হবে।

মা’র কথায় দর্শকসারিতে উপস্থিত বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যবসায়িক কার্যনির্বাহীদের মধ্যে হাততালি এবং হাসাহাসির হিড়িক পড়ে যায়।

জ্যাক মা’র লক্ষ্য আলিবাবার কার্যক্রম সারা বিশ্বের উদ্যোক্তাদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। তার কোম্পানির কার্যনির্বাহীরা মনে করেন এতে করে চীনা মার্কেটের গণ্ডি পেরিয়ে এটা সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে সেবা দিতে পারবে। চীনের বাইরে ব্রাজিল এবং রাশিয়ার বাজারে আলিবাবা ইতিমধ্যে জায়গা নিতে পেরেছে।

ওবামা অবশ্য আলোচনার আরেক অতিথি ফিলিপাইনের উদ্যোক্তা আইশা মিজেনোর উদ্দেশে অনেক প্রশংসা করেন। আইশা মিজেনো একজন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রফেসর এবং তিনি নোনা পানি দিয়ে বাতি জ্বালানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। আইশা যখন বলেন যে তিনি এই বাতি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে চান, তখন ওবামা জ্যাক মা’কে এই কাজে বিনিয়োগ করার কথা বলেন। ওবামা জ্যাক মা’র দিকে উদ্দেশ করে তাকিয়ে বলেন, আমি শুধু বলছি আপনি যদি একটু ঘটক হিসাবে এখানে অংশ নেন আরকি।

জ্যাক মা হাশিমুখে এর উত্তর দেন। তিনি বলেন, আলিবাবা তার মোট লাভের ০.৩ শতাংশ অর্থ তরুন উদ্যোক্তাদের সাহায্যার্থে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সহ আরো অনেক পরিবেশগত সমস্যায় ব্যয় করে আসছে গত ৬ বছর ধরে।

মা মনে করেন পরিবেশ রক্ষার্থে প্রযুক্তির ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী।

চীনে বর্তমান বিশ্বের সবেচেয়ে বেশি শিল্প কারখানা রয়েছে এবং সেখানে ক্ষতিকারক গ্রীণ হাউজ গ্যাস নির্গমনের হারও সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি উত্তর চীন সাগরে ওয়াশিংটনের কার্যক্রম নিয়ে বেইজিঙের সাথে যে টানাপড়েন চলছিল পরিবেশ রক্ষায় দুই দেশের সম্মিলিত চুক্তি হয়তো সেটাকে কিছুটা ভালোর দিকে নিয়ে যাবে।



মন্তব্য চালু নেই