আরব আমিরাতে কবিতার সঙ্গে কবিদের অন্যরকম সাহিত্য আড্ডা

আরব আমিরাত প্রতিনিধি : শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রবাসীদের কবিদের সাহিত্য আড্ডা। কবিদের সাহিত্য আড্ডায় আর যাই থাকুক না কেন, কবিতা তো এসেই যাবে। কবিতার সঙ্গে কবিদের অন্যরকম সাহিত্য আড্ডা হয়ে গেল শক্রবার ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা সংযুক্ত আরব আমিরাত এর রাজধানী আবুধাবির মিলিনিয়াম কর্নিশ পার্কে -আয়োজনে দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও ব্যবস্থাপনায় জাবতীয় কবিতা মঞ্চ,আরব আমিরাত শাখার ব্যবস্থাপনায় এক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।

সাহিত্য আড্ডা দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চ আরব আমিরাত শাখার সভাপতি, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মুহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে, দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চ,আরব আমিরাত শাখার সম্মানিত নির্বাহী সভাপতি
সদা হাসিমুখে কবি ওবাইদুল হক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

সাহিত্য আড্ডায় প্রথম পর্ব প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবিতা মঞ্চ দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ আরব আমিরাত শাখার উপদেষ্টা বিশিষ্ট চিকিৎসক লেখক ও সাহিত্যিক ডাঃ শামসুর রাহমান তিনি বলেন প্রবাসী কবি সাহিত্যিকদের স্বতঃ পূর্ত অংশ গ্রহণে বর্ণিল হল প্রবাসের মাটিতে সফলতার কাব্য কথা। শেকড়কে নিয়ে যারা লেখনি ধারণ করেন তারাই শ্রেষ্ঠ সাহিত্য রচনা করতে পারেন। কালজয়ী লেখক অদ্বৈত মল্লবর্মণ তার প্রমাণ। তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসে তিনি শেকড়কেই সন্ধান করেছেন। তাই তো এ উপন্যাসটি শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরো অভিমত প্রকাশ করেন আড্ডায় লেখকদের ভাবের বিনিময়ে ঘটে, নতুন চিন্তার সূত্রপাত হয়, লেখার সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করা যায়।

দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চের উপদেষ্টা ও কবি এনামুল হক বলেন প্রবাসী কবি লেখকদের এমন মহৎ উদ্যোগ সৃজনশীলতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সাহিত্যকে করবে সমৃদ্ধ, এদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক অনির্বাণ কবিতা।

দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চের উপদেষ্টা ও সাহিত্যিক মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন ভূঁইয়া তিনি বলেন প্রবাসে শ্রমের পাশাপাশি তরুণদের সৃজনশীল কাজে বেশি বেশি এগিয়ে আসতে হবে। হতে হবে প্রকৃত মানুষ। এটা সম্ভব হলে তরুণরাই আমাদের সমাজ বদল করতে পারবে। আর তরুণদের চলার পথে অগ্রজরা বরাবরই তাদের ছায়াসঙ্গী হিসাবে জুগাবে উৎসাহ উদ্দীপনাকে আরো বাড়িয়ে দিবে। এ ধরনের আয়োজন সব সৃজনশীল মানুষের জন্য করতে পারলেই স্বার্থকতা আসবে বলেও মন্তব্য করেন ।

দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী নজরুল ইসলাম তিনি বলেন খোলা আকাশের নিচে,এক পড়ন্ত বিকেলের রঙ্গিন আলোর আভায় সবুজ ঘাসের সবুজ গালিচার মনোমুগ্ধকর শীতল বৃক্ষরাজির নিচে সাহিত্য আড্ডায় মেতে উঠি এক ঝাঁক প্রবাসী লেখক কবি সাহিত্যপ্রেমী ও সাহিত্য অনুরাগী বন্ধু প্রতিম সাদামনের মানুষ।

যুমুনা টিভি আরব আমিরাত প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ, আরব আমিরাত শাখার উপদেষ্টা ও যুমুনা টিভি আরব আমিরাত প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ বলেন কবি হচ্ছে বিশ্ব ভিখারী সারাবিশ্ব থেকেই কবি সমৃদ্ধ করে তার কবিতা। তরুণ কবিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছন্দ কবিতা অন্যতম শারীরিক কাঠামো; যা থাকতেই হবে। তিনি আরো বলেন, বাংলা কবিতায় ঠাকুর বা ইসলামের বাইরে জীবনানন্দ দাশের অবস্থান একেবারেই পৃথক, যা অনেকের মধ্যে একজন নয়, বরং তিনি নিজ গুণেই অনন্য।

সাহিত্য আড্ডা শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ,আরব আমিরাত শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি কবি নাজিম মাহমুদ বলেন প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন ‘ অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাসে সাহিত্যচর্চা ও সাহিত্যনতুন উদ্যোমে এগিয়ে চলেছে। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং নিয়মিত এমন আড্ডার আয়োজন করা হবে।’নবীন-প্রবীণ কবিদের সঙ্গে কবিতা অনুরাগীরাও প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে ওঠেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কবি ও লেখক সাখাওয়াত হোসেন বকুল তিনি বলেন সংকট পেরিয়ে নতুন উদ্যোমে এগিয়ে চলবে দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চ আরব আমিরাত শাখা । এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং নিয়মিত এমন সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করা হলে ভালো হবে।

আড্ডার বিষয়বস্তু কোনও নির্দিষ্ট না থাকলেও তা বাংলা সাহিত্যের নানা ডালপালা আধার করে বেড়ে উঠে। কখনো সমকালীন কবিতা, কবিতার সংকট ও সম্ভাবনা; কখনো কবির দৈন্য ও বাংলা কবিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে নানা আলোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। আড্ডায় চায়ের ফাঁকে ফাঁকে চলে জলখাবার। আগত কবিরা নানা বিষয়ে তাদের ধ্যানধারনা ও অভিজ্ঞতা পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করেন।লেখকদের আড্ডার ভরকেন্দ্রে থাকে নতুন কিছু সৃষ্টির দুরন্ত আবেগ ও আমেজ।

স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন “প্রবাসীর আত্ন কথা” কবি এনামুল হক “তুমি কষ্টের প্রতিচ্ছবি’ কবি মুহাম্মদ মুসা “অপারগতা” কবি নাজিম মাহমুদ “সব ভুলে যাবো একদিন” সাখায়াত হোসেন বকুল “অমল কান্তি” এস এম তরিকুল ইসলাম “প্রবাস কষ্টের খেলাতে” মঞ্জুর হোসেন ।

সাহিত্য আড্ডায় আরো উপস্থিত ছিলেন ৭১নিউজ টিভি আরব আমিরাত প্রতিনিধি কবি, লেখক,মোহম্মদ মঞ্জুর হোসেন,আবৃত্তিকার এস এম তরিকুল ইসলাম,মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন,পার্থ,অর্ণব,ডি এম লিটন,প্রশান্ত,নুরনবী প্রমুখ।

জাতীয় কবিতা মঞ্চ ও দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ আরব আমিরাত শাখার সভাপতি ও বিশিষ্ট কবি,সাহিত্যিক, মুহাম্মদ মুসা সমাপনী বক্তব্য বলেন
বিভিন্ন সময় সাহিত্য চর্চা করতে গিয়ে দেখেছি- ইদানিং সময়কার কবিদের যেসব কবিতা জনপ্রিয় হয়েছে তার সবগুলোই সহজ-সরল ও উপমা সমৃদ্ধ। কোন দুর্বোধ্য কবিতা জনপ্রিয় হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবুও কেন দুর্বোধ্যতার পেছনে এতো ছোটাছুটি? অনেক কবি যুক্তি দেখাতে চান- আমার কবিতা নিয়ে ভবিষ্যতে গবেষণা হবে, আমি যদি সাধারনের মুখের ভাষায় কবিতা লিখে ফেলি তাহলে সাধারণ পাঠক আর আমার মধ্যে পার্থক্য রইলো কি? আমরা কিন্তু এই শ্রেণীর মতামত দেয়া কবির সাথে মোটেও একমত নই।আমাদের যুক্তি হচ্ছে- কবিতা পড়া ও বোঝার জন্য একজন পাঠকের ভালো মন ও আবেগ থাকার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আবেগের সেই জায়গা তো এখন ক্রমেই দখল করে নিচ্ছে অস্থিরতা । এসবের মোকাবেলায় কবিতাকে বাচিয়ে রাখতে হলে কবিদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে প্রয়োজন সহজ-সরল উপমা সমৃদ্ধ মাটি ও মানুষের কবিতা লেখা। আপনার লেখা যদি সব শ্রেণীর পাঠক বুঝতে না পারে তাহলে কি লিখলেন আপনি? লেখক-সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন- মানুষের মুখের ভাষাই কলমের ভাষা হওয়া উচিত। আমরা ও তার সাথে সম্পূর্নরুপে একমত।

জাতীয় কবিতা মঞ্চ ও যুগান্তর স্বজন সমাবেশ এর যৌথ উদ্যোগে ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ও দৈনিক যুগান্তর সাহিত্য সম্মেলন ১৬, আলোচনা সভা, গুণীজন সংর্বধনা , কবিতা পাঠ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নানা কর্মসূচীর হাতে নিয়েছি আপনার দোয়া করবেন এই বলে অনুষ্টান শেষ হয়। ।

সাহিত্য আড্ডায় দ্বিতীয় পর্বে আরব আমিরাত বাংলা ব্যান্ড এর আয়োজনে মনো মুগ্ধ সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা ।



মন্তব্য চালু নেই