প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখের সামনে দেখা ভয়াল অভিজ্ঞতা
“পুরো এলাকায় ছিল ক্রিসমাসের আবহ। চারদিকে গান বাজছে, ক্রিসমাস উপলক্ষে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। মানুষজন পান করছে। উৎসবমুখর একটা পরিবেশ। আর তারপরই চোখের সামনে এই ভয়ংকর ঘটনা!”
এভাবেই সেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন বার্লিনে প্রথমবারের মত বেড়াতে যাওয়া ব্রিটিশ পর্যটক এমা রাশটন।
জার্মানির বার্লিনের কেন্দ্রে এক ক্রিসমাস মার্কেটে লরি ঢুকে পড়ার পর অন্তত ১২ জন নিহত এবং অন্তত ৪৮জন আহত হয়েছে।
এমা বলছেন, তিনি ‘নেহাৎ ভাগ্যের’ জোরে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।
“আমার থেকে মাত্র আট বা দশ ফুট দূরে লরিটি উঠে পড়েছিল, আর কয়েক পা সামনে থাকলেই ওটার নিচে পড়তে হতো।”
“বিকট শব্দ করে যখন লরিটি সামনে থাকা কুড়েটির ওপর আছড়ে পড়ে, আমরা কেবল দেখলাম ঝোলানো বাতিগুলো ছিড়ে পড়লো আর কুড়েটি পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়লো।”
“হোটেলে ফেরার পথে দেখলাম রাস্তাজুড়ে ধংসযজ্ঞ। দেখলাম মানুষজন হাত দিয়ে মাথা ধরে আছে। কেউ কেউ উঠে দাঁড়িয়েছে। চারিদিকে কাঁচ আর কাঠের টুকরা ছড়ানো ছিটানো ছিলো।”
বার্লিনার মর্গেনপোষ্ট নামে (বার্লিন মর্নিং পোষ্ট) সংবাদপত্রে কাজ করেন ইয়ান হোলিয়ের। দুর্ঘটনার পর রাস্তায় মাটিতে মানুষকে পড়ে থাকতে দেখেছেন। তাদের কয়েকজন ছিল ট্রাকের নিচে।
ভেঙ্গেচুরে গুড়িয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলছিলেন, ভেঙ্গে পড়া দোকান, চারদিকে ভাঙ্গা কাঁচের আর থালাবাসনের ভাঙ্গা টুকরা, আর মেঝেতে পড়ে থাকা তরল পানীয়।
“সেগুলো রেড ওয়াইন না রক্ত ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না।”
চারদিকে ছড়িয়ে থাকা তিনি বলছেন, এই ঘটনা তাকে কয়েক মাস আগে ফ্রান্সের নিস শহরে লরি নিয়ে হামলার কথা মনে করিয়ে দেয়।
ঐ মার্কেটে আসা আরেকজন ব্রিটিশ নাগরিক মাইক ফক্স বলছিলেন, কিভাবে তিনি ভেঙ্গে পড়া একটি দোকানের ভেতর আটকে পড়া মানুষদের বের হতে সাহায্য করেছিলেন।
“আমরা যখন ঐ মার্কেট থেকে বেরুচ্ছিলাম, তক্ষুনি বড় ট্রাকটি এসে পড়ল। আমাকে আর আমার গার্লফ্রেন্ডকে পাশ কাটিয়ে ঢুকে পড়লো। আমার তো মনে হয়, মাত্র তিন মিটার দূরে ছিলাম আমি।”
কয়েক মূহুর্ত পরে মাইক চারপাশে তাকিয়ে দেখলেন, দোকানটির ভিতরে দুইজন শুয়ে আছে, সম্ভবত হাত বা পা ভেঙ্গে গেছে তাদের।
বার্লিনের বাসিন্দা ইব্রাহিম কোলাক বিশ্বাস করেন লরি তুলে দেবার ঘটনা নেহাত কোন দুর্ঘটনা নয়, এটি ইচ্ছাকৃত।
মন্তব্য চালু নেই