হিলারি-বুশ জমজমাট লড়াই?

যুক্তরাষ্ট্রে ক্লিনটন-বুশ পরিবারের পুরোনো লড়াই আবারো ফিরছে। তবে এ লড়াই ঢাল-তলোয়ারের নয়, ভোটের। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিনিয়র বুশ ও বিল ক্লিনটনের মধ্য যে লড়াই হয়েছিল, ২০১৬ সালে তা দেশটির রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। ওই লড়াইয়ে ‘যুদ্ধবাজ’ নেতা বুশকে হারিয়ে ক্ষমতায় বিল ক্লিনটন এলেও এবার তার স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন পারবেন কি না, সেটা এখনই বলা মুশকিল।

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে প্রার্থিতার জন্য প্রচারণায় নেমে পড়েছেন হিলারি। তাকে প্রাথমিক বাছাইয়ে উন্নীত হতে হবে। তবে ২০০৮ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে প্রাথমিক বাছাইয়ে হারলেও এবার ডেমোক্র্যাট শিবিরে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। হিলারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করার এক দিনের মাথায় বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা সারলেন মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ হার্বার্ট বুশের ছেলে এবং জর্জ ওয়াকার বুশের ছোট ভাই জেব বুশ।

তবে নিজের পারিবারিক পদবি ‘বুশ’ বাদ দিয়ে শুধু ‘জেব’ নিয়ে সোমবার প্রচারণা শুরু করেন জেব বুশ।

ফ্লোরিডার প্রাক্তন গভর্নর জেব বুশ নিজ শহর মিয়ামিতে সোমবার এক র‌্যালিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট হলে, তার ভাষায় দেশটির বর্তমান দুরবস্থা ঘোচাবেন তিনি। তিনি বলেছেন, দেশের অবস্থা এখন খুব খারাপ। আর এ অবস্থা পরিবর্তনে তিনি নিজে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান।

র‌্যালিতে দেওয়া ভাষণে ওয়াশিংটনের তথাকথিত এলিটদের সমালোচনা করে বলেন, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়া উচিত এমন একজনের, যিনি দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করে বদলে দেবেন।

তিনি বলেছেন, দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ধীর অর্থনৈতিক গতি, ঋণের বোঝা বৃদ্ধি এবং মধ্যবিত্ত নাগরিকদের ওপর ব্যাপক করের বোঝা বাড়ানোর জন্য দায়ী বর্তমান সরকার। এ অবস্থা পরিবর্তনে নিজের নির্বাহী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি দেশকে বিশ্বের সেরা অর্থনীতিতে রূপান্তর করবেন।

ভাষণের একটি অংশ তিনি স্প্যানিশ ভাষায় দেন, যা কিনা বলা হচ্ছে, একটি জাতীয় ইস্যুর অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিরল ঘটনা। ভাষণে বড় ভাই বুশের আমলের ইরাক যুদ্ধ, আফগানিস্তান যুদ্ধসহ বিতর্কিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সমর্থন দেন তিনি। কিউবার নাম সন্ত্রাসী দেশের তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্যও বারাক ওবামার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। এ ছাড়া ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ওপরও জোর দেন তিনি।

জেবসহ এই নিয়ে রিপাবলিকান দলের মোট ১১ জন সদস্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন।

যদিও মতামত জরিপকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত কারোরই তুমুল জনপ্রিয়তা রয়েছে, এমনটি বোঝা যাচ্ছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের চূড়ান্ত নির্বাচনে হিলারি-বুশেরই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা বেশি। আর এটা হলে বুশ-ক্লিনটন পরিবারের লড়াই আবার মার্কিন রাজনীতিতে ফিরে আসবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি জিতলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। আর হোয়াইট হাউস পাবে প্রথম ‘ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’।

তথ্যসূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা।



মন্তব্য চালু নেই