দ্য ইকোনোমিক টাইমসকে কেজরিওয়াল
ক্ষমতা ছেড়ে ভুল করেছি
হুট করে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে ভুল করেছিলেন বলে ‘দ্য ইকোনোমিক টাইমস’ এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রথম স্বীকার করেছেন ভারতের আম আদমি পার্টি (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর সেকারণে জনগণের কাছে এএপি’র নীতি নিয়ে ভুল বার্তা গেছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
কেজরিওয়াল বলেন, সঠিক সময় বিবেচনা না করে হঠাৎ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেয়া তার ঠিক হয়নি। জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতির কারণে এ ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ক্ষেত্রে তার দল আরো সতর্ক থাকবে।
দিল্লির সরকার ছেড়ে দেয়াটা কি ভুল ছিল?- এ প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে কেজরিওয়াল বলেন, দিল্লিতে সরকার গঠন এবং পরে তা ছেড়ে দেয়া নিয়ে তার কোন অনুতাপ নেই। এ সব সিদ্ধান্তই ঠিক ছিল। কিন্তু নীতিগতভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়াটাকে জনগণ স্বাগত জানাবে- এটা ধরে নেয়াটাই ছিল মস্ত ভুল।
“আমরা ভেবে ছিলাম মানুষ নিজে নিজেই পদত্যাগ করার কারণ বুঝতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। এখানে যোগাযোগের একটা ঘাটতি ছিল। আর সে ঘাটতি পূরণ করেছে বিজেপি এবং কংগেস। তারা জনগণকে বুঝিয়েছে যে আমরা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছি”।
কেজরিওয়াল আরো বলেন, “বিজেপি এবং কংগ্রেস জনলোকপাল বিল আটকে দেয়ার দিনই আমাদের সরকার ছেড়ে দেয়া উচিত হয়নি। আরো কিছুদিন পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হত। পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ কি তার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে হত জনগণের সঙ্গে বৈঠকে বসে। তা না করে আমরা হুট করেই পদত্যাগ করলাম। আর জনগণও বুঝতে পারল না আমরা কেন তা করলাম। এটাকে নেতিবাচকভাবেই দেখা হল। জনসংযোগের দিক দিয়ে আমরা ভুলটা করলাম। ভবিষ্যতে আমাদেরকে আরো সতর্ক থাকতে হবে”।
ইকোনোমিক টাইমসের সাংবাদিকের সঙ্গে ভারতের বর্তমান লোকসভা নির্বাচন, ভবিষ্যত রাজনীতিসহ অন্যান্য আরো বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন কেজরিওয়াল।
এবারের নির্বাচনে আম আদমি পার্টি (এএপি) কত আসন পাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে কেজরিওয়াল বলেন, “আমরা কোনো সংখ্যা ধরে এগুচ্ছি না। তবে আমি বলতে পারি আমরা এমন দুইটি আসনে জিতব যা দেশের রাজনীতির জল্পনা-কল্পনার মোড় ঘুরিয়ে দেবে। আর তা হলো আমেথি ও বারানসি।”
কেজরিওয়াল প্রশ্ন রাখেন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যদি ২০০ আসনেও জয়ী হয় কিন্তু বারানসির আসনটি হারায়, আপনি কি মনে করেন ওই বিজয় দলের জন্য কোনো শুভ অর্থ বহন করবে? একইভাবে আমেথিতে কংগ্রেস হেরে গেলে দলটি কোনোভাবে একক বৃহত্তম দল হিসাবে আবির্ভুত হতে পারলেও নেতৃত্ব নিয়ে সঙ্কটে পড়বে।
বিজেপি’র ব্যাপারে কেজরিওয়াল বলেন, “আমি নিশ্চিত, দলটি ১৮০ আসনের বেশি পাবে না। মোদিও প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন না”।
ভারতের অনেক প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলাপ করে তিনি এ ধরনের বিশ্লেষণ দাঁড় করিয়েছেন বলে জানান কেজরিওয়াল।
চলমান লোকসভা নির্বাচন সম্পর্কে কেজরিওয়ালের অরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি হল- ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সরকার গঠনকারীরা লোকসভার এমপি’দের সমর্থন সঙ্কটে পড়বে। ফলে আবারও নির্বাচন করতে হতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই