এবার ইন্দোনেশিয়ায় ৫০০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা উদ্ধার
থাইল্যান্ডের পর ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ৫০০ অবৈধ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির পশ্চিমঞ্চলীয় উপকূল থেকে রোববার সকালে উদ্ধার হওয়ায় নৌযানে বিদেশগামী ওই অভিবাসীরা বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গার নাগরিক বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় মানবাধিকার আইনজীবী ও অভিবাসী কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা রুগ্ণ বলে জানিয়েছেন তারা।
জাকার্তাভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার মিশন উপপ্রধান স্টিভ হ্যামিল্টন জানান, চারটি নৌকায় প্রায় ৫০০ জন অভিবাসী ছিল। তাদের মধ্যে বেশ কিছু নারী ও শিশুও রয়েছে। নৌকাগুলো আচেহ প্রদেশের সাব জেল সানুদ্দনে আনা হয়। ত্রাণকর্মীদের সেখানে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মানব পাচারকারীরা তিনটি নৌকা সমুদ্রের উপকূলে রেখে পালিয়ে যায়। অন্যটিতে তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় সমুদ্রে ভাসছিল।
ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃতদের পুলিশ স্টেশন ও নিকটস্থ মসজিদে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতি যত্ন নেওয়া হচ্ছে। আচেহ প্রদেশের উদ্ধারকারী দলের প্রধান বুডিয়াওয়ান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘নৌযান ভর্তি ‘অসহায়’ মানুষের কথা প্রথম জেলেদের কাছ থেকে জানতে পারি। আমাদের টিম সেখান গিয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে আসা অন্তত ৪৬৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে। তারা নিরাপদ রয়েছেন।’
ওই নৌকায় থাকা মিয়ানমারের নাগরিক মোহাম্মদ জুনাইয়েদ বলেন, তারা দুই মাস আগে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে নৌকায় বেরিয়ে পড়েন। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা বলে জানান তিনি। তবে সেখানে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা মিয়ানমারের আরাকান প্রজেক্টের প্রধান ক্রিস লেওয়ারের মতে, মিয়ানমারে বৌদ্ধদের হামলার মুখে গত তিন বছরের প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা নৌকায় করে অন্য দেশে পালিয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটা সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে উদ্ধার হওয়া অভিসাসীরা রোহিঙ্গা বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। উদ্ধার হওয়াদের অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাদের দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, মানব পাচারকারীদের থামার প্রধান স্থান ছিল থাইল্যান্ড। সেখানকার গহীন অঞ্চলে বিদেশগামীদের আটকে রেখে নির্যাতন করে স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হতো। কিন্তু সম্প্রতি থাইল্যান্ড সরকারের তৎপরতার কারণে তারা রুট পরিবর্তন করেছে।
লেওয়ার দাবি করেন, বর্তমানে মালাক্কা প্রণালীতে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীকে আটকে রেখেছে মানবপাচারকারীরা।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, এপি।
মন্তব্য চালু নেই