সপ্তাহে দুইজন পরিবেশবাদীকে হত্যা
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে অবহেলিত গুরুত্বপূর্ণ আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কার্বণ নিস্বরণের দায় বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হচ্ছে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে। অনুন্নত দেশগুলো পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষায় যতটুকু অগ্রগামী তারচেয়ে অনেক বেশি পিছিয়ে উন্নত দেশগুলো। প্রতিনিয়ত কার্বণ উৎপাদনকারী নতুন নতুন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে ইউরোপভুক্ত সদস্যরা। আর এই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বের অনেক সংগঠনই কাজ করছে। প্রতিবছরই তারা উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের খেসারত হিসেবে অনুন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের দাবি তো মেটানো হচ্ছেই না উল্টো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পরিবেশবাদীদের ধীরে ধীরে হত্যা করা হচ্ছে। লন্ডনভিত্তিক সংগঠন গ্লোবাল উইটনেসের দাবি অনুযায়ী, গত ২০১৪ সালে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুইজন পরিবেশবাদীকে হত্যা করা হয়েছে।
সংগঠনটির প্রকাশিত রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয় যে বিগত সময়ের তুলনায় ২০১৪ সালে পরিবেশবাদীদের উপর হামলার হার বেড়েছে শতকরা ২০ ভাগ বেশি। পরিবেশবাদী হত্যার পাশাপাশি সংগঠনটি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক হত্যার বিষয়টিও তুলে আসে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সাংবাদিক হত্যার পরিমান পরিবেশবাদী হত্যার দ্বিগুন। বিশেষত যে সকল পরিবেশবাদী এবং সাংবাদিকরা জ্বালানি, শ্রমিক স্বাস্থ্য, গার্মেটস ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট-প্রতিবেদন তৈরি করে তাদেরকেই হত্যা করা হয়েছে এবং হচ্ছে।
হত্যাকাণ্ডের অধিকাংশই সংঘটিত হয়েছে মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকায়। ব্রাজিলে ২৯জন এবং কলম্বিয়ায় ২৫জন পরিবেশবাদীকে হত্যা করা হয়েছে গত বছরে। তবে পরিবেশবাদীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে হন্ডুরাসকে। গত পাঁচ বছরে দেশটিতে কমপক্ষে ১০১জন পরিবেশবাদী-সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। আর হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবেশবাদীরা সবাই খনি বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন বলে জানা যায়।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, আগামী বছরে অনুষ্ঠিতব্য প্যারিস কনফারেন্সে পরিবেশবাদী হত্যার বিষয়টি নিয়ে বিশেষ আলোচনা করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে আরও বিশদভাবে কাজ করার জন্য সকল পরিবেশবাদীদের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়। উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশেও পরিবেশবাদীরা হুমকির মুখে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে বেশ কয়েকজন পরিবেশবাদী বিভিন্ন সময় নিহত হয়েছেন, যার সুরাহা এখন পর্যন্ত হয়নি।
মন্তব্য চালু নেই