ধানমন্ডিতে পে-স্কেলের দাবীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি সভা

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্ট-ধানমন্ডি থানা শাখার শিক্ষকদের সাথে এক প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মহসীন রেজাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

গতকাল ১৯ এপ্রিল বিকাল ৫:৩০ ঘটিকায় রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক মিলনায়তনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি এ সভার আয়োজন করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জনাব মেহেরুন্নেছার সভাপতিত্বে এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে গজমহল ট্যানারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জনাবা সুফিয়া খাতুনসহ প্রায় ১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারৃন্দ উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি সরকার দেশের সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির জন্য ৮ম পে-স্কেল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত পে-স্কেল জুলাই ২০১৫ থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু বেসরকারি শিক্ষকদের ৮ম পে-স্কেলে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি বিধায় কঠোরভাবে সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। শিক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকরা সুন্দর একটি শিক্ষা সমাজ বির্নিমানে ভূমিকা রাখছে। দেশের প্রায় ২৬ হাজার এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। অথচ সেই শিক্ষকদের পে-স্কেল নিয়ে সরকার নানা ভাবে টালবাহানা করছে।

আগামী জুলাই’১৫ থেকে নতুন পে-স্কেল দেয়ার কথা থাকলেও এ নিয়ে নতুন করে সময় ক্ষেপনের কথা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরণের কোন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত শিক্ষকরা মেনে নিবেন না। প্রয়োজনে তারা সকল শিক্ষক সমিতির সমন্বয় করে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দিবেন। বক্তারা আরো বলেন, চাকরি শেষে অবসর ভাতা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করেও কোন সমাধান মিলছেনা। অধিকাংশ শিক্ষক মৃত্যুর আগে টাকা পাওয়ার সংবাদটি শুনে যেতে পারেন না। তাই এ বিষয়ে তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

শিক্ষক ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন রেজা শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া প্রসঙ্গে বলেন, বাড়ি ভাড়া ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করেই শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় প্রচার করে বেড়াচ্ছেন যে, ‘আমাদের সরকার শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৫ গুণ বৃদ্ধি করছেন।’ এটিও শিক্ষদের সাথে এক ধরণের লুকোচুরি। পে-স্কেল নিয়েও এভাবে নয়-ছয়-করা হতে পারে সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ক্যারিয়ার শিক্ষা ও চারুকারু বই সিলেবাসভুক্ত করা হলেও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ৩১৭টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সরকার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিলেও বেসরকারি শিক্ষকদের বেলায় যথারিতী কার্পণ্য করা হচ্ছে। অথচ ওই সব সরকারি বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে মোটেই ভাল নয়, সরকারকে এ বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত।

শিক্ষক ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা মো.আবদুল আলীম, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম, মতিঝিল থানার সাধারণ সম্পাদক মো.শাহীদুর রহমান ও খিলগাঁও থানা সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন। শিক্ষকদের দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপস্থিত শিক্ষকদের মতের সমন্বয়ে জনাবা মেহেরুন্নেছাকে আহব্বায়ক, জনাবা সুফিয়া খাতুনকে যুগ্ম আহবায়ক, জনাব মো. সাজেদুল আলমকে সদস্য সচিব এবং জনাব কাওসার আহমেদকে যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে ৪ সদস্যের একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পরিশেষে আগামী জুলাই থেকে পে-স্কেল প্রদানের যৌক্তিক দাবি তুলে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে সভাপতি মহোদয় প্রতিনিধি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।



মন্তব্য চালু নেই