‘ওয়াশিকুরকে হত্যা করেছে আনসারুল্লাহর সদস্যরা’

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ব্লগার ওয়াশিকুরকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের স্লিপার সেলের সদস্যরা হত্যা করেছে। প্রশিক্ষণ নেওয়ার মাত্র ১৫দিনের মাথায় তাকে হত্যা করে স্লিপার সেলের সদস্যরা।

বুধবার বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের একথা বলেন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ওয়াশিকুর হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া আরিফ ও জিকরুল্লাহ রিমান্ডে এ তথ্য দিয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কয়েকটি স্লিপার সেল রয়েছে। এর মধ্যে ২-৩টি স্লিপার সেল সচল রয়েছে।

যে টিম ওয়াশিকুর হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে, তাদের ১৫ দিন আগে যাত্রাবাড়ীর একটি বাড়িতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন আগে তারা অস্ত্র চালাতে পারবে কি-না তা পরীক্ষা করার জন্য মহড়া দেয়। এরপর ৩০ মার্চ সকালে তারা ওয়াশিকুরকে হত্যা করে। এই টিমের নেতৃত্ব দেয় মাসুম নামে এক বড় ভাই।

মনিরুল বলেন, এরা সবাই হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র। আরিফ দুই বছর আগে দাওরা পাস করে ঢাকায় চলে আসে। আর জিকরুল্লাহ এখনো ওই মাদ্রাসার ছাত্র। ঘটনার দিন মাসুম ঘটনাস্থলে ছিল না। তবে সে কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, একটি স্লিপার সেলের সদস্য অন্য আরেকটি স্লিপার সেলের সদস্যদের চেনে না। এরা মানসিক দিক দিয়ে এমনই শক্তভাবে তৈরি যে একজন ধরা পড়লেও কিছু আসে যায় না। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের আদলেই এই স্লিপার সেলের সদস্যরা কাজ করে থাকে। একজন আরেক জনের ব্যাপারে গায়ে পড়ে উৎসাহ দেখায় না।

মনিরুল আরও বলেন, রিমান্ডের প্রথম দিনে মনে হয়েছে, এরা উগ্র জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে। উগ্র মতাদর্শ ধারণ ও লালন করে। আরিফ ২০১১ সালের দিকে এক মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বয়ান শুনে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য হন। এরপর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় গ্রেফতার হয়। পরে সে জামিনে মুক্ত হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, এই সেলের সদস্যদের নিয়ে মায়ানমারের আরাকান রাজ্যে গিয়ে উচ্চতর জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা ছিল। এজন্য কিছুদিন আগে তারা পিকনিকের নাম করে কক্সবাজারের টেকনাফে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নাফ নদী পার হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিজিবি শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তারা সেকাজ করতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তেজগাঁও হাতিরঝিল বেগুনবাড়ী এলাকায় বাসা থেকে বের হলে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে তিন যুবক। পরে বাবুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় জনতা হাতে-নাতে দুজনকে আটক করে।



মন্তব্য চালু নেই