ব্লগার বাবু হত্যা মিশনে তিন যুবক, দু’জনের দায় স্বীকার
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়িতে ‘ব্লগার’ ওয়াশিকুর রহমান বাবু (২৬) হত্যা মিশনে তিন যুবক অংশ নেয়। তাদের প্রত্যেকের কাছে একটি করে চাপাতি ছিল। কিন্তু সেখান থেকে দু’টি চাপাতি ব্যবহার করা হয়। তারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের দায়ে বাবুকে কুপিয়ে হত্যা করে।
খুনের ঘটনার পর সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ধাওয়া দিয়ে পুলিশ দুই মাদ্রাসাছাত্রকে আটক করে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন আহমেদ এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান।
আটকরা হলেন— জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম। জিকরুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এবং আরিফ রাজধানীর মিরপুর-১ এর একটি মাদ্রাসায় পড়েন।
ঘটনাস্থল থেকে ব্যবহৃত দু’টি ও ব্যাগের মধ্যে অব্যহৃত একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে আটকদের রাজধানীর মিন্টুরোডে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বেগুনবাড়ি দিপীকার ঢাল থেকে সোমবার সকালে ওয়াশিকুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ুন কবির উদ্ধার করেন।
এএসআই জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় ওয়াশিকুরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, ওয়াশিকুরের পকেট থেকে পাওয়া তার ভোটার আইডিকার্ড থেকে জানা যায়, তিনি লক্ষ্মীপুরের টিপু সুলতানের ছেলে। ঢাকার তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় থাকতেন তিনি।
নিহত ওয়াশিকুর রহমান বাবু গত প্রায় দেড় বছর ধরে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের পাশে ফারইস্ট এ্যাভিয়েশন এজেন্সিতে ট্রেনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে দাবি করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী কুতুব উদ্দীন চৌধুরী।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কিলিং মিশনে সরাসরি তিনজন অংশ নেয়। তাদের মধ্যে দু’জনকে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে আটক করে।’
তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আটক জিকরুল্লাহ ও আরিফ খুনের কথা স্বীকার করেছে। তবে ব্যাগে ভরে নিয়ে আসা আরিফের চাপাতিটি খুনের সময় ব্যবহার করেনি বল দাবি করেছে। তার চাপাতিটি অব্যহৃত পাওয়া গেছে। বাকি দু’জনই মূলত বাবুকে কুপিয়ে হত্যা করে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবু তাহের নামে আরেকজন অংশ নেয়। পুলিশের ধাওয়ায় সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।’
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওসি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফেসবুক ও ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অপপ্রচারমূলক লেখালেখি করার কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আটকরা স্বীকার করেছে।’
মন্তব্য চালু নেই