বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের প্রতিবাদ
গৌরনদীতে ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু
অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ও কালো পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে র্যাব-৮ ও থানা পুলিশের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকালে বাঁধা প্রদান করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যাবসায়ীরা। এসময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না খোলায় বিপ¬¬ব বিশ্বাস নামের এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশ্বববর্তী গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাজারে। অনির্দিষ্টকালের জন্য দোকানপাট বন্ধ রেখে ধর্মঘটের প্রথমদিনেই চরম বিপাকে পড়েছে ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। কাছাকাছি কোন বাজার বা হাট না থাকায় বাজার করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা।
মাহিলাড়া হাট-বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম হারুন বয়াতী জানান, ঠিকাদারী কাজের বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ১৭ মার্চ দুপুরে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক হারিছুর রহমানের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জনে সশস্ত্র অবস্থায় অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, ডিগ্রী কলেজ, মসজিদ, ক্লাব, মাহিলাড়া বাজারের দশটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, তিনটি পরিবহন কাউন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ইউনিয়ন পরিষদের টানানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করে।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ওইদিন বিকেলে র্যাব দিয়ে জেলার দু’বারের শ্রেষ্ঠ মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর সহদর সলিল গুহ পিন্টুসহ আরো তিনজনকে আটক করিয়ে অস্ত্রের নাটক সাজিয়ে আটককৃতদের অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে মাহিলাড়া বাজারের প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসায়ীরা জরুরি সভা করে উল্লেখিত হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শান্তি ও আটককৃতদের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ধর্মঘটের আহবান করেন।
কর্মসূচী অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা সকাল নয়টার দিকে স্ব স্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করতে আসলে ঘটনাস্থলে পূর্ব থেকে উপস্থিত র্যাব ও থানা পুলিশের সদস্যরা ব্যবসায়ীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হারুন বয়াতী আরো অভিযোগ করেন, র্যাব ও পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদের কালো পতাকা উত্তোলন করতে গেলে র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা বিপ্লব বিশ্বাস নামের এক ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এছাড়াও তাকে (হারুন বয়াতীকে) গৌরনদী থানার ওসি মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ হুমকি প্রদর্শন করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মাহিলাড়া এএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণয় কান্তি অধিকারী জানান, পাশ্ববর্তী ডিগ্রী কলেজসহ বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের প্রতিবাদে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী সকাল দশটায় তারা মাহিলাড়া কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার কালো পতাকা দিয়ে ঢেকে প্রতিবাদের আয়োজন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, গৌরনদী থানা পুলিশ তার বিদ্যালয়ে তল্লাশী চালিয়ে কালো পতাকা জব্দসহ তার কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে দুটি স্বাক্ষর আদায় করে নিয়েছেন। অপরদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলার বিল্বগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ীরা স্ব স্ব ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করেন। ব্যবসায়ীকে মারধর ও বাঁধার অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী থানার ওসি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দরা সাধারন ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে দোকানপাট বন্ধ রেখেছে।
মন্তব্য চালু নেই