মাছ-মুরগির খাবারে ফের ক্রোমিয়ামের সন্ধান

রাজধানীর হাজারীবাগের একটি অবৈধ ফিড কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার কেজি বিষাক্ত মাছ ও মুরগির খাবার জব্দ করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে মাছ-মুরগির খাবার তৈরির অপরাধে ওই কারখানার মালিকসহ চারজনকে আটক করে দণ্ডও দেয়া হয়েছে। হাজারীবাগের এসব পশু খাদ্য ক্রেতাদের কাছে ‘হাজারীবাগের বাংলা প্রোটিন’ নামে পরিচিত।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকার ঝাউচরে পুতুল এন্টারপ্রাইজে এ অভিযান চালানো হয়। কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযান পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা। এ সময় র‌্যাব-২ এর উপ-পরিচালক ড. দিদারুল আলম ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ডা. লুৎফর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ার পাশা জানান, কারখানার মালিক আবুল কালামকে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড, আবদুল জলিলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড, হাসান শেখকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড এবং ফারুক হাওলাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আবুল কালাম জানান, গত ২ বছর ধরে ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে তিনি এসব খাদ্য তৈরি করেন। ট্যানারির বর্জ্যর শুটকি ১০ টাকা কেজি হিসেবে কিনে এটি গুড়া করে ২০-২৫ টাকা কেজি হিসেবে গাজীপুরসহ আশপাশের খামারিদের কাছে বিক্রি করেন। খামারিরা মাছ বা মুরগির খাবারের সঙ্গে এটি মিশিয়ে নেন। তবে কেউ অর্ডার দিলে মেশিনের মাধ্যমে ভুট্টাসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে পরিপূর্ণ ফিড তৈরি করে দেন।
আনোয়ার পাশা আরো জানান, বিষাক্ত এসব ফিডের মাধ্যমে মানবদেহে ক্রোমিয়াম প্রবেশ করছে। এ ফিড মাছ বা মুরগি খেলে মলমূত্রের মাধ্যমে খানিকটা বের হয়ে গেলেও একটা বড় অংশ মাছ-মুরগির শরীরে জমা হতে থাকে। এমনকি ডিমেও তা জমা হয়। ওই মাছ, মুরগি বা ডিম খেলে মানুষের শরীরে ক্রোমিয়াম প্রবেশ করে এবং মলমূত্রের মাধ্যমে এর সবটা বের হতে না পেরে শরীরে জমা হয়। এরফলে ক্যান্সার (বিশেষত ফুসফুস ক্যান্সার), টিউমার, পাকস্থলি/ক্ষুদ্রান্ত্র আলসার, পুরুষত্বহীনতা, অকাল প্রসব, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, অ্যাজমা, চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এরআগেও হাজারীবাগের এ ধরনের কারখানায় অভিযান চালিয়ে তা সিলগালা করে দিয়েছে র‌্যাব। গেল বছরের শেষের দিকে হাজারীবাগ ও তদসংলগ্ন এলাকার অবৈধ ও বিষাক্ত ফিড উৎপন্নকারী সব কারখানা বন্ধে বিশেষ অভিযানের দাবি জানিয়েছিল পোল্ট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট ৭টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত পোল্ট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটি (বিপিআইসিসি)।



মন্তব্য চালু নেই