শিবিরকে তথ্য দিচ্ছে পুলিশ!

রাজধানী ঢাকায় দুর্বৃত্তদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। দিনে-রাতে যেখানে-সেখানে পুড়ছে গাড়ি। বিস্ফোরিত হচ্ছে ককটেল-বোমা। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে মরছে পথচারীসহ নিরীহ মানুষ। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে বাড়ছে দগ্ধ মানুষের আত্মচিৎকার। কিন্তু যারা ঘটাচ্ছে নারকীয় অপরাধ, সেইসব দুর্বৃত্তদের বেশিরভাগই থেকে যাচ্ছে অধরা। ঘটনার পর পুলিশ মামলা দায়ের আর রাজনৈতিক পরিচয়ধারীদের নাম আসামির তালিকায় লিপিবদ্ধ করেই নিষ্ক্রিয় থাকছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের কিছু বিপদগামী কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ কৌশলী সহায়তায় নাশকতাকারীরা অধরা থাকার সুযোগ পাচ্ছে। তবে কিছু-কিছু নাশকতার ঘটনায় পুলিশের পদক্ষেপ প্রশংসারও দাবি রাখে।

বিগত দিনের নাশকতা, ঝটিকা মিছিল থেকে গাড়ি ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগের ধরণ দেখে পুলিশসহ সাধারণ মানুষের অনেকেরই ধারণা- জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররাই নাশকতা ঘটাচ্ছে বেশি। তাদের সহযোগিতা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। ব্যাপক তথ্যানুসন্ধানে সরকারের একাধিক সংস্থার প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে একই তথ্য।

গত ৪/৫ দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে একই ঘটনা। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এ সব ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে সোমবার রাত দশটার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ইটিসি পরিবহণের যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সময়ে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার আগেই স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে ছাত্রসহ চারজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন ঢাবির শিক্ষার্থী সেলিম মিয়া (২৪), পান বিক্রেতা সেলিম (১৮) এবং রিকশাচালক খাইরুল (২২) ও জাকির (২২)। সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন দুর্বৃত্ত টিএসসি মোড়ে দুটি ককটেল ছোড়ে। এতে পাশে থাকা চারজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ৪টি বাসে ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত ৮ থেকে ৯ টার মধ্যে এ ঘটনাগুলো ঘটে।

অধিকাংশ ঘটনার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস। অথচ আগাম কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা। আবার অনেক এলাকায় কতিপয় পুলিশ সদস্য রয়েছে যাদের সঙ্গে রয়েছে শিবিরের ঘনিষ্ট সম্পর্ক। যে কারণে তারা আগাম নাশকতার খবর জানতে পেরেই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সরিয়ে নেই। পুলিশ চলে যাওয়ার পরই অগ্নিসংযোগ গাড়ি ভাংচুর চালায় শিবির ও তার সহযোগিরা।

শোনা যাচ্ছে, মহানগর পুলিশের ১০ এসি, ২ এডিসি, একটি থানার ওসি’সহ আরো সাত ওসি রয়েছেন তারাই মূলত খবরা খবর শিবিরের কাছে পৌঁছে দেয়। কোন স্থানে পুলিশ আছে? কোন স্থানে নেই ? নাশকতা চালিয়ে কোথা হতে পালাতে হবে সব কিছুই তারা জানিয়ে দেন। আর যে কারণেই খুব সহজে অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাংচুর, ঝটিকা মিছিল করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। আমাদের সময়.কম



মন্তব্য চালু নেই