শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

পরাজয় স্বীকার করে নিলেন রাজাপাকশে

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হলেন মাহিন্দা রাজাপাকশে।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে রাজাপাকশে সরকারি ভবন ছেড়ে দিয়েছেন।’

বিবিসি ও এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ না হলেও আশা করা হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাইথরিপালা সিরিসেনা অন্তত ৪ লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন।’

ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনী কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে নির্বাচনে।

টানা ১০ বছর নেতৃত্ব দেয়ার পর তৃতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনরায় যাচাইয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন রাজাপাকশে। আগাম নির্বাচনের সুবিধাকে তিনি কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশে তার প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা রানিল বিক্রেমাসিঙ্গের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ সকালে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি সিরিসেনার সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। শান্তিপূর্ণ এই গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শ্রীলঙ্কান জনগণকে অভিনন্দন জানাই আমি।’

নির্বাচনে ১৯ জন প্রার্থী অংশ নেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় রাজাপাকশে ও সিরিসেনার মধ্যে।

২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজাপাকসে। তৃতীয় দফায় সহজে উতরে যাওয়ার আশায় নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই নির্বাচন দেন তিনি।

কিন্তু এবার তার জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিরিসেনা। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার বহু ভোটার তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

তবে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ কঠোর হাতে দমনে সফল হওয়ার কারণে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন রাজাপাকসে। এছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনর্গঠনেও তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। তবে স্বজনপ্রীতির কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে নিয়োগ দেয়ার কারণে সমালোচকরা বলে থাকেন, তিনি দেশটাকে পারিবারিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছেন।

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জন করায় নির্বাচনে সুবিধাজনক পর্যায়ে ছিলেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির নেতা সিরিসেনা। দেশটির মোট জনগোষ্ঠীর ৩০ ভাগ সংখ্যালঘু তামিল।



মন্তব্য চালু নেই