যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা পরিদর্শনে ৪ বাংলাদেশি শ্রমিক নেত্রী

মার্কিনে স্টেট ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামে’ অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের লংমন্টে গেছেন বাংলাদেশি চার পোশাক শ্রমিক নেত্রী। গত শুক্রবার তারা সেখানে একটি ম্যাট্রেস কারখানা পরিদর্শন করেন।

দেশের অন্যতম এ চার শ্রমিক নেত্রী শিশু শ্রমিক হিসেবে পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেন। এক সময় তারা শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গ সম্পৃক্ত হন। বর্তমানে তারা দেশের চারটি বড় শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে রয়েছেন।

লংমন্ট সফরকারী চার শ্রমিক নে্ত্রী হলেন, খাদিজা আক্তার, নমিতা নাথ, তানিয়া আক্তার ও স্মৃতি আক্তার। তারা গত শুক্রবার লংমন্টের ভারলো ম্যাট্রেস কারখানা পরিদর্শনে যান। এ সময় তারা দুই দোভাষীর সাহায্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের কারখানায় পণ্য উৎপাদনের পার্থক্য সম্পর্কে অবগত হন।

ভারলো কারখানা পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার র‌্যানডন ব্রিউস্টার তাদের জানান, ১৯৫৮ সালে ইলিনয়ে যাত্রা শুরু করে ভারলো। এর প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী ভারলোর নামে যাত্রা শুরু হয় কারখানাটির। শুরুতে স্থানীয়ভাবে ভারলো প্রথম ৩০ বছর পণ্য উৎপাদন করতো। বর্তমানে এখানে ১৩ জন কর্মী রয়েছেন, যারা দৈনিক ১০ থেকে ১৫টি ম্যাট্রেস তৈরি করেন। তবে কর্মীদের প্রায় সবাই পারিবারিক বা বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয় বলেও জানান ভারলো ম্যানেজার।

এরপর ভারলো ম্যানেজার বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলকে ঘুরে দেখান, কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা উপকরণ দিয়ে ম্যাট্রেস তৈরি হয়। অ্যান্ডু করডোভা নামে এক কর্মী আধুনিক সেলাই মেশিনের সাহায্যে তাদের একজোড়া ম্যাট্রেস তৈরি করে দেখান।

ব্রিউস্টার তাদের স্থানীয়ভাবে ‘ল্যাপ’ নামে পরিচিত ম্যাট্রেস তৈরির কলাকৌশল দেখান, কীভাবে একপাশ থেকে সেলাই করে মাত্র দুই মিনিটে অর্ধেক ম্যাট্রেস তৈরি করা সম্ভব।

কারখানা ঘুরে দেখে বাংলাদেশের সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সহ সভাপতি খাদিজা আক্তার বলেন, এ সফরে এসে প্রযুক্তির ব্যবহার দেখে তিনি মুগ্ধ। তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা এ অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরব। আমরা কারখানায় কাজ করি ও সেখানেও সেলাই করা ম্যাট্রেস তৈরি হয়। কিন্তু এ মেশিন ইউনিক। যদি আমরা দেশে এ ধরনের মেশিন ব্যবহার করতে পারি, তবে অনেক সময় বাঁচবে।

খাদিজা আক্তার বাংলাদেশি অন্যান্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের মতোই শিশু শ্রমিক হিসেবে দুর্বব্যহারের শিকার হন, যে সময়টাতে গার্মেন্টসে ইউনিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।প্রাপ্তবয়স্ক হবার পর তিনি শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠিত করার দায়ে চাকরিচ্যুত হন এবং তাকে গার্মেন্টসে কাজের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। এক পর্যায়ে ২০০৫ সালে গড়ে তোলেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

সূত্র: টাইমস কল



মন্তব্য চালু নেই