মার্কিন নোবেল বিজয়ীর মুখে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা
মানুষের সুখের জন্য কী দরকার? আমরা কীভাবে সুখের পরিমাপ করবো? দরিদ্র দেশগুলোকে কি বিদেশি সহায়তা দেয়া উচিত? বৈষম্য কি বাড়ছে নাকি কমছে? বৈশ্বিক পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে নাকি আরও খারাপ হচ্ছে?
ভোগ, দারিদ্র্য ও জনকল্যাণ নিয়ে গবেষণার জন্য ২০১৫ সালে অর্থনীতিতে ইঙ্গো-মার্কিন নোবেলবিজয়ী ও অর্থনীতিবিদ অ্যানগাস ডেটন এসব প্রশ্ন তুলেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রিন্সটনের এমিরেটাস এই অর্থনীতিবিদ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনমিকসের এক সম্মেলনে ভাষণ দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈষম্য কমলেও যুক্তরাষ্ট্রে তা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার চেয়ে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে বসবাস করা ভালো।
মার্কিন এই নোবেলবিজয়ী ওই সম্মেলনে ভাষণের পর যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য আটলান্টিকের প্রতিবেদক অ্যান্নি লোরির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে মানুষ ভালো আছে নাকি নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ভালো আছে- মার্কিন এই নোবেলবিজয়ী কথা বলেন এ বিষয়েও।
অ্যান্নি লোরি বলেন, আপনার ভাষণে উত্তেজক কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন। যেমন- আপনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মতো দারিদ্র্যপীড়িত একটি দেশে উন্নতমানে জীবনযাপন করতে পারবেন। আমি মনে করি না যে, এটি সত্য হবে।
অর্থনীতির নোবেলবিজয়ী অ্যানগাস ডেটন বলেন, আমি এই বিষয়টির সঙ্গে লড়াই করছি। ক্যাথি এডিন ও লুক শ্যাফারের একটি বইয়ে বলা হচ্ছে সেখানে (বাংলাদেশে) চলার জন্য দিনে ২ মার্কিন ডলার প্রয়োজন। আমি চিন্তা করছি, বিশ্বব্যাংক এই আয়ের সীমা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। আর তারা পুরো বিশ্বের জন্য এটি করছে। কারণ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য হলো সবকিছুই কভার করা। যুক্তরাষ্ট্রে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে ৩ কোটি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসাসেবা ও শিশুদের জন্য শিক্ষা সুযোগ বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন ডেটন। তিনি বলেন, দরিদ্রদের সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি থাকলেও খুব কম মানুষই এ সুযোগ-সেবা নিতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক এলাকা অ্যাপালশিয়ায় বসবাসকারী মানুষের গড় আয়ু বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুর অনেক নিচে।
তবে এসব বিষয়ের মূল্যায়ন কীভাবে করা হবে তা আমি জানি না। এ্সব দরিদ্র এলাকার লোকজন আসলেই দরিদ্র নয়। কারণ তারা চিকিৎসার জন্য লাখ লাখ ডলার পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কেন এই নেতিবাচক ভাবনা- এমন এক প্রশ্নের জবাবে অ্যানগাস ডেটন বলেন, আমি প্রতি গ্রীষ্মে মন্টানায় পাঁচ সপ্তাহের জন্য থাকি এবং এটিই আমার চোখ খুলে দিয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই