বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশের ‘শেকড়’ কন্যা
বৃক্ষমানব আবুল বাজানদারের পর শেকড় কন্যার সন্ধান পাওয়া গেছে। তার নাম সাহানা খাতুন (১০)।
গত ২৯ জানুয়ারি সাহানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বালুরচর গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়ার একমাত্র কন্যা সাহানা কলমাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
তার গালে, নাকে, থুতনিসহ একাধিক স্থানে গজিয়েছে শেকড়।
চিকিৎসকরা বলছেন, সাহানা আবুল বাজানদারের মতো বিরল রোগে আক্রান্ত। তবে তার শরীরে এ রোগের মাত্রা অনেক কম। তাকে দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব।
বুধবার বাংলাদেশের এই শেকড় কন্যাকে নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, সম্ভবত সাহানা খাতুনই প্রথম নারী, যে ‘বৃক্ষমানব’ রোগে আক্রান্ত।
চার মাস আগেও সাহানার গাল, নাক ও থুতনির শেকড় নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন না বাবা শাহজাহান। কিন্তু দিন গড়ানোর সঙ্গে সেটি আরও বাড়তে থাকে।
এরপরই তিনি মেয়েকে পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন।
চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, সাহানাই বিশ্বের প্রথম নারী যে, বিরল ‘বৃক্ষমানব’ রোগে আক্রান্ত।
তবে তারা আশাবাদী, সঠিকভাবে চিকিৎসা পেলে সাহানাও সুস্থ হয়ে উঠবে।
এর আগে বাংলাদেশে প্রথম এই রোগে আক্রান্ত হন আবুল বাজানদার। তার হাত ও পায়ে শেকড় গড়ানোয় প্রিয়তমা স্ত্রী ও মেয়েকে আদর পর্যন্ত করতে পারতেন না।
গাছের মতো প্রায় ৫ কেজি শেকড় হয়েছিল ২৭ বছর বয়সী আবুল বাজানদের। তবে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার পর তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ। এ সময়ে তার হাত ও পায়ে ১৬ বার অস্ত্রোপচার করা হয়।
গত মাসে ঢামেকের চিকিৎসকরা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, আবুল বাজানদার এখন স্বাভাবিক এবং সুস্থ রয়েছেন। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খুব শিগগিরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে।
সাহানা খাতুনও একই চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার বাবা শাহজাহান স্বস্তিবোধ করছেন।
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা খুব গরিব। মাত্র ছয় বছর বয়সে আমার মেয়ে তার মাকে হারায়।’
শেকড় অপসারণ করে চিকিৎসকরা তার মেয়ের সুন্দর মুখ ফিরিয়ে দিবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মোহাম্মদ শাহজাহান।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাহানা খাতুনও আবুল বাজানদারের রোগে আক্রান্ত। তবে অতটা গুরুতর নয়। চিকিৎসায় সাহানার দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।
মন্তব্য চালু নেই