৪ লাখ মানুষের বিপরীতে চিকিৎসক মাত্র ২ জন!

খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। উপজেলার প্রায় ৪ লাখ জনগোষ্ঠীর সেবায় কর্মকর্তাসহ মাত্র দুইজন চিকিৎসক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া জনবলের অভাবে যন্ত্রপাতিসহ আসবাবপত্র বিনষ্ট হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৩৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র দুইজন।

গত নভেম্বর মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়া অগ্রগতির প্রতিবেদনে ৫৬০ জন রোগী ভর্তি, বহির্বিভাগে ২ হাজার ৯১৩ জন, মেজর অপারেশন ৩৬ জন, মাইনর অপারেশন ৫২ জন, ডায়রিয়া রোগী ৮৩৬জন, যক্ষ্মা রোগী ৩১ জন, আর্সেনিক ৮১ জন, নিউমোনিয়া ২৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। কোনো কোনো মাসে এর অধিক রোগীর চাপ থাকে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

নার্সের কোটা পূরণ হলেও তৃতীয় শ্রেণির ৪১টি ও চতুর্থ শ্রেণির ১৯টি পদ শূন্য রয়েছে। ২০০৯ সালের ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পর ভবন সংস্কার, সম্প্রসারণ, বেশ কিছু উপকরণ বৃদ্ধি করা হলেও সেগুলো ব্যবহার না হওয়ায় বিনষ্ট হচ্ছে। ৩১ শয্যার জনবল ও আসবাবপত্র দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম চলায় সর্বক্ষেত্রে বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। বিপুল অর্থে নির্মিত ভবনগুলো অকেজো পড়ে আছে। নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দেয়া এক্স-রে ও আল্ট্রাসনো মেশিন।

গত ৫ ডিসেম্বর হাসপাতাল কর্তৃক থানায় করা এক জিডিতে দেখা যায়, ডাক্তার ও নার্সদের জন্য নির্মিত ডরমেটরিগুলো ব্যবহার না হওয়ায় তার ভিতরে থাকা ৩৬টি সিলিং ফ্যান চুরি হয়ে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রভাত কুমার দাশ জানান, পাইকগাছা ছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকেও অনেকেই এখানে সেবা নিতে আসে। যা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার দ্বারা সেবা কার্যক্রম চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ফলে উপজেলার চারটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে চারজন চিসিৎসক নিয়ে চিকিৎসা সেবার কাজ চলছে। ফলে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো তালাবদ্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, ৫০ শয্যার হাসপাতালকে ৩০ শয্যার জনবল দিয়ে চালালেও জনবল সংকট থেকে গেছে অনেক। আমিসহ দুইজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে এতো বড় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা দেয়া অসম্ভব।



মন্তব্য চালু নেই