রোহিঙ্গা গণহত্যার ইস্যুতে অং সাং সুচিকে যা বললো জাতিসংঘ

বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ক্ষমতাশীন দলের প্রধান এবং নোবেল বিজয়ী অং সাং সুচিকে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কি হচ্ছে তা স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণের জন্য সু চিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন, তাদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া এবং রোহিঙ্গা মুসলিম নারীদের পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই অঞ্চলে সফর করে প্রকৃত ঘটনা যাচাইয়ের জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে সরকার এবং সেনাবাহিনী বরাবরই রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন এবং ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। গত অক্টোবরের ৯ তারিখে সীমান্তের তিনটি পোস্টে হামলার ঘটনায় নয় পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাখাইন রাজ্যে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।

গত সপ্তাহে সু চি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে অভিযান চালাচ্ছে এর বাইরে আর কিছুই সেখানে ঘটেনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উস্কানিতে ওই অঞ্চলে মুসলিম এবং বৌদ্ধদের মধ্যে সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ উপদেষ্টা বিজয় নামবিয়ার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের কঠোর অবস্থান এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা প্রদানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের চেয়ে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণে বেশি আগ্রহ স্থানীয় লোকজনের কাছেই শুধু নয় আন্তর্জাতিকভাবেও চরম উদ্বেগ ও হতাশা তৈরি করেছে।

রাখাইন রাজ্যে যা ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করে সরকারকেই দ্রুত একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন নামবিয়ার। রাখাইন রাজ্যের মাওংদাও এবং বুথিদাওং রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ৮৬ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে সেনাবাহিনীর হাতে হত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের সংখ্যা আরো বেশি। ওই অঞ্চলে কোনো সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিককে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। একারণে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করাও সম্ভব হচ্ছে না।

সেনাবাহিনীর বর্বর অত্যাচারে রাখাইন রাজ্য থেকে ১০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এই সমস্যা সমাধান করা সু চির জন্য এখন একটি বড় চ্যালেঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আইনের মধ্যে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবকে মহাসচিব কফি আনান।



মন্তব্য চালু নেই